নির্বাচিত হওয়ার পর নিউইয়র্কের শীর্ষস্থানীয় দুই পদে কাদের মনোনয়ন দিলেন মামদানি
নিউইয়র্ক শহরের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি গত সোমবার তাঁর প্রশাসনের প্রথম বড় নিয়োগের ঘোষণা করেছেন। তিনি অঙ্গরাজ্য সরকারের অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ডিন ফিউলিহানকে সিটি হলের প্রধান ডেপুটি বা ডেপুটি মেয়র হিসেবে মনোনীত করেছেন।
৭৪ বছর বয়সী ফিউলিহান এর আগে সাবেক মেয়র বিল দে ব্লাসিওর প্রশাসনে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রথম ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মামদানির চেয়ে চার দশকের প্রবীণ ফিউলিহান নিউইয়র্ক শহরের প্রশাসনের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন।
এ ছাড়া মামদানি তাঁর অঙ্গরাজ্য পরিষদের শীর্ষ সহকারী এবং দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এল বিসগার্ড-চার্চকে চিফ অব স্টাফ হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন, যা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। এই মনোনয়নগুলো স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ৩৪ বছর বয়সী মামদানি তাঁর প্রশাসনে তরুণ, বামপন্থী সহযোগীদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে চান।
ম্যানহাটানে এক সংবাদ সম্মেলনে মামদানি বলেন, তাঁর প্রশাসনকে কেবল অর্থনৈতিক কর্মসূচির সাফল্যে নয়, বরং সাধারণ নাগরিক সেবা দিয়ে মূল্যায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে ময়লা পরিষ্কারের মতো দৈনন্দিন কাজের দক্ষতার বিষয়টিও যুক্ত থাকবে।
মামদানি বলেন, ফিউলিহান ও বিসগার্ড-চার্চ দুজনেই শহরকে রূপান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় নতুন ও সৃজনশীল চিন্তাধারা রাখেন। পাশাপাশি সেই ভাবনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতাও তাঁদের রয়েছে।
নীতিমালা বাস্তবায়নের পথে নানা বাধা মোকাবিলায় ফিউলিহান মামদানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হয়ে উঠতে পারেন। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ফিউলিহান রাজ্য পরিষদের শীর্ষ নেতাদের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। সম্প্রতি গভর্নর ক্যাথি হোকুল তাঁকে রাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কন্ট্রোল বোর্ডের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেন। ওই বোর্ড নিউইয়র্ক সিটির আর্থিক কার্যক্রম তদারকির কাজ করে।
১ জানুয়ারি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন মামদানি। এরপর মামদানিকে একের পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। নির্বাচনী প্রচারে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নিউইয়র্কের ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে বৃহৎ ও ব্যয়বহুল একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন। এর মধ্যে শহরে বাসে বিনা ভাড়ায় চলাচলের ব্যবস্থা, সরকারি অর্থায়নে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং প্রায় ১০ লাখ ভাড়া-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়া বৃদ্ধির স্থগিতাদেশও রয়েছে।
এসব বাস্তবায়নে মামদানিকে রাজ্য পরিষদের সদস্যদের এবং গভর্নর হোকুলকে তাঁর পরিকল্পনা অনুমোদন করাতে হবে। এর বাইরে কর ও অন্যান্য উদ্যোগের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার রাজস্ব সংগ্রহের ব্যাপারেও রাজি করাতে হবে। হোকুল বলেছেন, তিনি মামদানির সঙ্গে বিশেষ করে শিশুসেবার উদ্যোগে কাজ করতে আগ্রহী, তবে বাসভাড়া পুরোপুরি বাতিল করার ব্যাপারে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন।
এর পাশাপাশি রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি মামদানিকে ‘চরমপন্থী কমিউনিস্ট’ বলে অভিহিত করেছেন। ট্রাম্প ইতিমধ্যে হুমকি দিয়েছেন, যদি মামদানি তাঁর অপছন্দের নীতি বাস্তবায়ন করেন, তবে তিনি নিউইয়র্ক সিটির জন্য নির্ধারিত গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দিতে পারেন কিংবা সেখানে ন্যাশনাল গার্ড পাঠাতে পারেন।