যুক্তরাষ্ট্রের বামপন্থী আন্দোলন অ্যান্টিফাকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের বামপন্থী আন্দোলন অ্যান্টিফাকে দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে এ–সংক্রান্ত এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি।

নির্বাহী আদেশে অ্যান্টিফাকে ‘সামরিক, অরাজকতাবাদী গোষ্ঠী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে সংগঠনটি।

১০ সেপ্টেম্বর ইউটাহর একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক কর্মী ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র চার্লি কার্ক খুন হওয়ার পর থেকেই অ্যান্টিফার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ২২ বছর বয়সী টাইলার রবিনসনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। তদন্তকারীদের বরাতে বলা হয়েছে, কার্ক ‘বিদ্বেষ’ ছড়াচ্ছিলেন—এমন যুক্তিতেই হামলাকে ন্যায্যতা দিয়েছেন রবিনসন।

নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘আইনসম্মত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দমনের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার আশ্রয় নেওয়ায় অ্যান্টিফাকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।’

নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, ‘আইনসম্মত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দমনের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার আশ্রয় নেওয়ায় অ্যান্টিফাকে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।’

কিন্তু অ্যান্টিফাকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে—সে বিষয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোর প্রতি একধরনের ইঙ্গিত দিয়ে আদেশে অভিযোগ করা হয়েছে, সংগঠনটি তাদের কর্মীদের পরিচয় গোপন রাখতে নানা পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করে থাকে। আদেশে বলা হয়, ‘অ্যান্টিফার পক্ষে বা তাদের সহায়তায় কাজ করা যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের প্রথম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় কালো পোশাক ও মুখোশ পরা অ্যান্টিফা সদস্যসহ অনেক প্রতিবাদকারী ওয়াশিংটনে কাচ ভাঙচুর করেন ও একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেন। ট্রাম্প দাবি করেন, পুলিশবিরোধী সহিংসতা থেকে শুরু করে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলার পেছনেও অ্যান্টিফার হাত আছে।

রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সমালোচকেরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ (সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা) ভিন্নমত দমনের অজুহাত ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে টার্গেট করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সমালোচকেরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ (সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা) ভিন্নমত দমনের অজুহাত ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে টার্গেট করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে।

‘অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট’ বা ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী’ বোঝাতে ব্যবহৃত ‘অ্যান্টিফা’ শব্দের উৎপত্তি ১৯৩০-এর দশকে জার্মানিতে হিটলারবিরোধী সমাজতান্ত্রিক গোষ্ঠীগুলো থেকে।

অ্যান্টিফা সমর্থকদের প্রায়ই পুরোপুরি কালো পোশাকে দেখা যায়। বর্ণবাদ, অতি দক্ষিণপন্থী মূল্যবোধ তথা ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন তাঁরা। আত্মরক্ষায় কখনো কখনো সহিংস পন্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন হতে পারে বলেও তাঁরা দাবি করে থাকেন।