মাউই দ্বীপ ভ্রমণ না করতে পর্যটকদের আহ্বান

দাবানলে পুড়ে ছাঁই হয়েছে বাড়িটি। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া সেই বাড়ি পরিদর্শনে এক স্বেচ্ছাসেবী। লাহাইনা, মাউই দ্বীপ, হাওয়াই
ছবি: এএফপি

দাবানলে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মাউই দ্বীপ ভ্রমণ না করতে পর্যটকদের আহ্বান জানিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ৯৩ জনের মৃত্যু ও শত শত বাড়িঘর পুড়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ আবাসিক হোটেলে গৃহহীন বাসিন্দাদের থাকার বন্দোবস্ত হচ্ছে।

হাওয়াই পর্যটন কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় গত শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার, মাউইর বাসিন্দা এবং পর্যটনশিল্পের এখন পূর্ণ মনযোগ থাকবে দাবানলে গৃহহীন হয়ে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা। তবে অন্য দ্বীপগুলোয় পর্যটকদের যেতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

হাওয়াইয়ে জন্ম হলিউড অভিনেতা জেসন মোমোয়ার। মাউই দ্বীপ ভ্রমণে পর্যটকদের সতর্ক করে গত শনিবার ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মাউই এখন আপনার অবকাশ যাপনের স্থান নয়। আপনারা এটা মনে করবেন না যে দাবানলে বিপর্যস্ত দ্বীপটির আপনার উপস্থিতি প্রয়োজন।’

হাওয়াইয়ের পর্যটন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঐতিহাসিক শহর লাহাইনায় দাবানলের পর মাউইয়ের কাহুলাই বিমানবন্দর হয়ে দ্বীপটি ছেড়ে চলে গেছেন প্রায় ৪৬ হাজার বাসিন্দা ও পর্যটক।

হাওয়াইয়ের গভর্নর জশ গ্রিন বলেন, দাবানলে গৃহহীন হওয়া বাসিন্দাদের জন্য ৫০০টি হোটেলের বন্দোবস্ত করা হবে। এ ছাড়া উদ্ধার কার্যক্রমে চালানো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সংস্থা ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির কর্মীর জন্য আরও ৫০০ হোটেল বরাদ্দ করা হবে।

এদিকে আবাসনসহ পর্যটকদের বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এয়ারবিএনবির সঙ্গে রাজ্য সরকার কাজ করছে। মূলত স্থানীয় লোকজনের জন্য ভাড়ায় থাকার বন্দোবস্ত করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গভর্নর গ্রিনের আশা, গৃহহীন বাসিন্দাদের জন্য ৩ থেকে ৯ মাস থাকার ব্যবস্থা করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

ক্ষতিগ্রস্ত ২২০০ ভবন

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি খবরে বলা হয়েছে, দাবানলে ২ হাজার ২০০টির বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অনুমান, যুক্তরাষ্ট্রে এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এ দাবানলে ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে আরও মরদেহ উদ্ধারের শঙ্কা করছেন তাঁরা।

মাউই পুলিশপ্রধান জন পেলিটার বলেন, ‘আমরা ধ্বংস্তূপের ভেতরে যেসব দেহাবশেষ খুঁজে পাচ্ছি, তা আগুনে গলে ধাতুর রূপ নিয়েছে। যখনই আমরা দেহাবশেষগুলো তোলার চেষ্টা করছি, সেগুলো খসে যাচ্ছে। এ জন্য মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।’