ব্যাংককে কমলা-সি বৈঠক, চীনকে খোলাখুলি আলোচনার আহ্বান

সি চিন পিং এবং কমলা হ্যারিস
ছবি: রয়টার্স

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস চীনকে খোলাখুলি যোগাযোগের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ শনিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতে তিনি এ আহ্বান জানিয়েছেন। ব্যাংককে এপেক সম্মেলন শেষে সির সঙ্গে বৈঠক করেন কমলা। খবর এএফপির।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সি চিন পিংয়ের বৈঠকের কয়েক দিনের মাথায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চীনা প্রেসিডেন্টের আলাপ হলো।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতাবিষয়ক জোটের (এপেক) সম্মেলন চলার সময় কমলা হ্যারিস চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন।

আরও পড়ুন

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলাপের সময় বাইডেনের বক্তব্যকে প্রতিধ্বনিত করেছেন কমলা হ্যারিস। তিনি বলেছেন, ‘দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের অবশ্যই খোলাখুলি আলোচনার সুযোগ রাখতে হবে।’

করোনা মহামারি শুরুর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিদেশ সফরে আছেন সি চিন পিং। ব্যাংককে এপেক সম্মেলনের ফাঁকে বিদেশি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি। গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলন চলার ফাঁকেও বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে।

এর আগে গত সোমবার ইন্দোনেশিয়ার একটি হোটেলে বাইডেনের সঙ্গে তিন ঘণ্টা ধরে সি চিন পিংয়ের বৈঠক হয়। দুই দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি ছিল তাঁদের প্রথম সশরীর বৈঠক।

এ বৈঠক নিয়ে দুই পক্ষই ইতিবাচক বক্তব্য দিয়েছে। বলেছে, সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, তা থামানোর আশা করছে তারা। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো ক্ষেত্রগুলোয় পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

আগামী বছরের শুরুর দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তাহলে এটি হবে ২০১৮ সালের পর কোনো মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিকের প্রথম চীন সফর।

গতকাল শুক্রবার কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ মিত্র দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। সেখানে উত্তর কোরিয়ার সবশেষ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন তাঁরা।

কমলা হ্যারিসের সঙ্গে থাকা এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার বলেন, ‘আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের  ভূমিকা আছে। চীনের উচিত নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে উত্তর কোরিয়াকে বোঝানো যে তারা যেন উসকানিমূলক আচরণ না করে। এ ধরনের আচরণ কেবল অঞ্চল ও বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে দেয়।’

সম্প্রতি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে দেখা গেছে। এ অঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে বেইজিং। তবে চীনের এ দাবি নাকচ করে আসছে তাইওয়ান। তারা নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখে।

গত আগস্টে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। চীনের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও পেলোসির তাইওয়ান সফরে ক্ষুব্ধ হয় বেইজিং। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান ঘিরে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায় চীন।

ইউক্রেনে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন কমাতেও চীনকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।