ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় কেন বন্ধ রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র

ড্রোন দিয়ে তোলা ছবিতে গাজা সিটির ধ্বংসচিত্র। ছবিটি ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ তোলাছবি: রয়টার্স

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়ে গাজা যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ থেকে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিনিময় অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে জানা আছে এমন ছয়জন কর্মকর্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তারা বলেন, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্র গাজার ওপর একটি মার্কিন ড্রোনের ‘লাইভ ভিডিও’ ইসরায়েলের সঙ্গে বিনিময় করা বন্ধ করে দিয়েছিল। গাজায় জিম্মিদের খোঁজ এবং হামাস যোদ্ধার অবস্থান শনাক্ত করতে ইসরায়েল সরকার ওই ভিডিও ব্যবহার করত।

কর্মকর্তাদের পাঁচজন বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দারা অন্তত কয়েক দিন এই ‘লাইভ ভিডিও’ ইসরায়েলকে দেননি।

দুটি সূত্র বলেছে, ইসরায়েল গাজায় তাদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য কতটা ব্যবহার করতে পারবে, সে বিষয়েও সীমা আরোপ করে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

ঠিক কোন সময়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে তাঁরা নির্দিষ্ট করে বলতে রাজি হননি।

তাঁরা বলেন, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানগুলোতে সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার সংখ্যা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের মধ্যে যখন উদ্বেগ বেড়েই চলছিল, তখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলা ওই ছয় সূত্রের কেউ তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।

সূত্রগুলো জানায়, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার সংখ্যা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে যখন উদ্বেগ বেড়েই চলছিল, তখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত ফিলিস্তিনি বন্দীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে বলেও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সন্দেহ ছিল।

আরও পড়ুন

তিনটি সূত্র আরও বলেছে, ইসরায়েল মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করার সময় যুদ্ধ আইন মেনে চলার বিষয়ে যথেষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি, এ নিয়েও কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল।

মার্কিন আইন অনুযায়ী, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে কোনো বিদেশি দেশের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করার আগে এ আশ্বাস পাওয়া আবশ্যক।

দুটি সূত্র বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ছিল সাময়িক ও কৌশলগত। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভেতর থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গাজা যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে গোয়েন্দা তথ্য ও অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে অব্যাহত সমর্থন দিয়ে যাওয়ার নীতিতে অটল থেকেছে।

এ বিষয়ে জানেন এমন এক কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে যথাসময়ে কিছু তথ্য বিনিময় করা বা না করা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকে। হোয়াইট হাউসের অনুমতি ছাড়াই তাঁরা এ বিষয়ে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

আরও পড়ুন

ঠিক কবে গোয়েন্দারা তথ্য বিনিময় না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অথবা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়ে অবগত ছিলেন কি না, তা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ বিষয়ে জানতে জো বাইডেনের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের আইন মেনে গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহারের নিশ্চয়তা দেওয়ার পর আবার তথ্য বিনিময় শুরু হয়।

আরও পড়ুন