কাঠবিড়ালি নিয়ে ৪৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি

ইয়েসনের কাঁধে নাইকো
ছবি: এপির ভিডিও থেকে

প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসার নানা নজির দেখা গেছে। এই তালিকায় নতুন আরেকটি ঘটনা যোগ করা যেতে পারে। এক তরুণ যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন পেতে পাড়ি দিয়েছেন কণ্টকাকীর্ণ অনেক পথ। অর্থাভাবে মুঠোফোনটি পর্যন্ত বিক্রি করে দিতে হয়েছে। কিন্তু তিনি ছেড়ে দেননি তাঁর আদরের কাঠবিড়ালিটি। তাকে সঙ্গে নিয়ে ছুটেছেন ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পথ।

ওই তরুণের নাম ইয়েসন (২৩)। বাড়ি ভেনেজুয়েলায়। বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য ছয় মাস ধরে তিনি মেক্সিকো সীমান্তে শরণার্থীশিবিরে রয়েছেন। এ খবর গত শনিবারের। ইয়েসন তাঁর কাঠবিড়ালির নাম দিয়েছেন নাইকো।

ইয়েসন বলেন, মেক্সিকো পর্যন্ত আসতে তাঁর কয়েক সপ্তাহ লেগেছিল। দীর্ঘ ওই পথ পাড়ি দিতে তাঁকে ভয়ংকর গহিন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হয়েছে। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ পথে চলতে গিয়ে তাঁকে এক ব্যক্তির মরদেহ পর্যন্ত মাড়াতে হয়েছে। সঙ্গে থাকা অর্থ ফুরিয়ে গেলে তিনি নিজের মুঠোফোনটি বিক্রি করে দেন। ওই টাকা দিয়ে তিনি বাসভাড়া মেটান।

ভেনেজুয়েলার লাখ লাখ নাগরিকের একজন ইয়েসন, যাঁরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নিজ দেশে যাচ্ছেন। ইয়েসন ঘর ছেড়েছেন, একটি কাঁধ ব্যাগ নিয়ে। তিনি সঙ্গে নিয়েছেন কালো ডোরাকাটা সাদা লোমের নাইকোকে। বৈরী পরিবেশ থেকে বাঁচাতে নাইকোকে তিনি রেখেছেন ছোট্ট একটি উলের থলেতে।

ইয়েসনের জন্য দুঃখগাথা হলো, তাঁকে চূড়ান্ত পর্যায়ে হয়তো নাইকোকে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ, টিকা-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত পোষ্য প্রাণী নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তবে শরণার্থীশিবিরের স্বেচ্ছাসেবীরা চেষ্টা করছেন, নাইকোকে সীমান্তের ওপারে নেওয়ার অনুমতি পাইয়ে দিতে। ইয়েসেনের কাঁধে চড়ে শরণার্থীশিবির ঘুরে বেড়ানো নাইকো যে সবার প্রিয় হয়ে উঠেছে।

ওই শরণার্থীশিবিরে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালক গ্লাডিস কানাস বলেন, অনেকে কুকুর, বিড়াল—এমনকি একজন খরগোশ নিয়েও এখানে এসেছেন। তবে কাঠবিড়ালি নিয়ে আসার ঘটনাটা একেবারেই নতুন। নাইকোর টিকা দেওয়ার নথি অভিবাসন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নাইকোকে ইয়েসনের সঙ্গে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে তিনি আশাবাদী।