আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নয়

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে বলেছে, সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন। তবে ক্লাস অনলাইনেই হবে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে বলেছে, সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন। তবে ক্লাস অনলাইনেই হবে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আমেরিকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসে সশরীরে উপস্থিতির বিষয়ে আগের সিদ্ধান্ত থেকে হঠাৎই পিছু হটেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এখন প্রশাসন বলছে, অধিকাংশ ক্লাসে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা নেই। ১৪ জুলাই মঙ্গলবার বোস্টনের আদালতে এ নিয়ে ক্ষুব্ধ পক্ষের মামলার শুনানির আগেই নাটকীয়ভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ১৪ জুলাইয়ের এই সিদ্ধান্তে আপাতত স্বস্তি পেয়েছেন। উপমা রহমান নামের বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থী বলেন, পরের সেমিস্টারের জন্য ইউনিভার্সিটিতে তাঁর ক্লাসের সময়সূচি ঠিক করা হয়ে গেছে। এর মধ্যে ক্লাসে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করার চেয়ে অনলাইন ক্লাসই বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় এভাবেই আগামী সেমিস্টারের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে রেখেছে। এ অবস্থায় ট্রাম্প প্রশাসনের বৈরী নির্দেশনায় উৎকণ্ঠায় ছিলেন তাঁর মতো বহু আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী।

লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলী বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একের পর এক তুঘলকি সিদ্ধান্ত হাস্যকর হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত নির্দেশনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। আদালতে পরাজয়ের আগেই পিছু হটার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনার অসারতাই প্রমাণিত হয়েছে।
আমেরিকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সব বা অধিকাংশ ক্লাসে সশরীরে উপস্থিতি ও অনলাইন শিক্ষার্থীদের ভিসা-সংক্রান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা শুরু হয়। প্রশাসনের নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার উদ্যোগ নেয় ১৮টি অঙ্গরাজ্য ও ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়া।
অনলাইন ক্লাস হলে শিক্ষার্থীদের আমেরিকায় থাকার ভিসা দেওয়া হবে না, এ কথা বলে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এক নির্দেশনা জারি করে। এর ফলে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থীকে সমস্যায় পড়তে হতো। এ খাতে মার্কিন সরকারের ৪১ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। এর বাইরে এসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর কারণে সাড়ে চার লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয় ।
করোনাভাইরাস ছড়াতে শুরুর পর মধ্য মার্চ থেকে আমেরিকায় লকডাউন শুরু হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। অধিকাংশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘ মেয়াদে অনলাইনে ক্লাস চালুর প্রস্তুতি নেয়।

হার্ভার্ডের মতো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ও জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ফিরতে পারেন। কিন্তু ক্লাস অনলাইনেই হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন নির্দেশ জারির পর হার্ভার্ড ও এমআইটির পক্ষ থেকে প্রথমেই একটি মামলা করা হয়।