ইউটিলিটি বিল হিসাব করে ফুড স্ট্যাম্প

তৃতীয়বারের মতো ২০১৯ সালে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) সাপ্লিমেন্টাল নিউট্রিশন প্রোগ্রাম তথা ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণের নীতি পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবিত নীতি অনুযায়ী, বিভিন্ন সরকারি সুযোগ–সুবিধা যেমন আবাসন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল যা ইউটিলিটি বিল হিসেবে পরিচিত, তার ওপর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বেঁধে দিয়েছে। নির্ধারিত এই অর্থ থেকে উপার্জন বেশি হলে ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণ করার অনুমতি মিলবে না।

ইউএসডিএর প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রায় ৮ হাজার পরিবার ফুডস্ট্যাম্প গ্রহণের

অনুমতি হারাবে। প্রতি পাঁচটি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারকে আগের চেয়ে কম অর্থ দেওয়া হবে। যদিও প্রায় ১৬ শতাংশ পরিবার আগের চেয়ে বেশি অর্থ পেতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ডেমোক্রেটিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতারা নতুন এই নীতির বিরোধিতা করেছেন। 

সেন্টার ফর বাজেট অ্যান্ড পলিসির সভাপতি রবার্ট গ্রিনস্টেইন বলেন, উপার্জন বেশি হলে ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণের অনুমতি নাও মিলতে পারে, এই ভয়ে অনেকেই কম উপার্জন করতে বা কম উপার্জন দেখাতে উৎসাহী হয়ে উঠবে।

গত এক বছর ধরেই ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণের নীতিতে নানা পরিবর্তন আসছে। প্রথমে বড়দিনের আগে ট্রাম্প সরকার ঘোষণা দেয়, ফুড স্ট্যাম্পের জন্য কাজ করার বাধ্যবাধকতার ওপর আরও কঠোর নীতি আরোপ করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ লোকের ওপর এই নীতির প্রভাব পড়বে।

৪০টির মতো অঙ্গরাজ্যে অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেমন নগদ অর্থ অথবা ট্যানফ (ট্যাম্পোরারি অ্যাসিস্ট্যান্স ফর নিডি ফ্যামিলিস) গ্রহণ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণের অনুমতি পাওয়া যায়। ইউএসডিএর ভাষ্যমতে, এই নীতি অনুযায়ী অনেকেই ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণ করে, অথচ এই সুবিধা নেওয়ার তাদের কোনো প্রয়োজন নেই।

প্রস্তাবিত নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করলেই ফুড স্ট্যাম্প মিলবে না। উপার্জিত আয় ও সম্পদের পরিমাণ যাচাই–বাছাই করে ফুড স্ট্যাম্প দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নীতি অনুযায়ী, প্রায় ৩০ লাখ লোক এবং ১৭ লাখ পরিবার ফুড স্ট্যাম্প গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হবে। এর মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সরকার প্রায় ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সঞ্চয় করতে সক্ষম হবে।

একটি পরিবারের মোট উপার্জন থেকে অনেক কিছু হিসাব–নিকাশ করে ফুড স্ট্যাম্প দেওয়া হয়ে থাকে। বাসা ভাড়া ও অন্যান্য খরচাদি যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি বিল প্রদান করে উপার্জিত আয় থেকে পর্যাপ্ত অর্থ অবশিষ্ট না থাকলে ফুড স্ট্যাম্প দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এসব খরচাদিতে ব্যয় করার পর কতটুকু অর্থ অবশিষ্ট থাকলে অথবা এসব ক্ষেত্রে কতটুকু খরচ করা যাবে, তার নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নেই। অঙ্গরাজ্যভেদে এই নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন। তাই এ নীতি পুরো দেশেই সাম্যাবস্থা আনবে বলে অনেকে মনে করেন।