বেশি সময় ঘরে থাকার পরও সন্তান জন্মদান কমছে

শিশু
প্রতীকী ছবি

করোনা মহামারির কারণে গত বছরের প্রায় পুরোটা সময় লোকজনকে ঘরে থাকতে হয়েছে। ঘরে বেশি সময় কাটানোর ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জন্মহারে ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম যুক্তরাষ্ট্র। করোনাকালে দেশটিতে জন্মহার নিম্নমুখী। আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

অবশ্য প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার নিম্নমুখী। গত ৩৫ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে দেশটিতে জন্মহার ছিল সর্বনিম্ন। তবে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার আরও কম হতে পারে। গবেষণায় এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের জন্মহারের সরকারি তথ্য পেতে আরও সময় লাগবে। তবে সিবিএস নিউজ দেশটির ৩২টি অঙ্গরাজ্যের জন্মহারের পরিসংখ্যান সংকলন করেছে। এই সংকলিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯৫ হাজার শিশু কম জন্ম নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ৩২টির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০ সালের জাতীয় জন্মহার ৪ শতাংশের বেশি কমে গেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশন এক গবেষণার আলোকে আভাস দিয়েছে, ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৩ লাখ শিশু কম জন্ম নিতে পারে।

করোনা মহামারি যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। শ্রমবাজারের এই নাজুক পরিস্থিতি দেশটির কর্মজীবী নারীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিবিসির খবরে বলা হয়।

করোনাকালে যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল ও শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়। লকডাউনের মধ্যে বাইরে যাওয়া, সামাজিক সম্মিলন সীমিত হয়ে পড়ে। এই ঘরবন্দী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখো নারী সন্তানের দেখভাল, তাদের পড়ানোসহ ঘরের কাজ করতে বাধ্য হন।

জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক জুটি (নারী-পুরুষ) করোনাকালে সন্তান গ্রহণ বিলম্বিত করছে। শারীরিক সম্পর্কে কম আকৃষ্ট হচ্ছে। সন্তান কম চাচ্ছে। এর কারণ, করোনা মহামারি ও তার অর্থনৈতিক ক্ষতি।

গুগল ট্রেন্ডসের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভধারণ সম্পর্কিত বিষয়ে জানতে অনলাইনে সার্চ দেওয়ার পরিমাণ গত বছর কম ছিল।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের গবেষণার লেখক মেলিসা কার্নে ও ফিলিপ লেভিন বলেন, যখন শ্রমবাজার দুর্বল থাকে, তখন জন্মহার কমে। আবার যখন শ্রমবাজারের উন্নতি হয়, তখন জন্মহারও বাড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কিছু বছর ধরে জন্মহার কমছে। এ নিয়ে দেশটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে উদ্বেগ আছে। জন্মহার বাড়াতে দেশটির নীতিনির্ধারকেরা নানা সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করছে।