করোনার নতুন স্ট্রেইন পাওয়া গেল যুক্তরাষ্ট্রে

প্রতীকী ছবি

যুক্তরাজ্যের পর এবার করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন) পাওয়া গেল যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক জানিয়েছেন, তাঁরা নতুন দুটি করোনার ধরন শনাক্ত করেছেন। গতকাল বুধবার এই তথ্য জানিয়েছেন তাঁরা।

ওহাইওর বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এনবিসির খবরে বলা হয়েছে, কলাম্বাস ও ওহাইওতে গত প্রায় তিন সপ্তাহজুড়ে করোনা ছড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে নতুন দুটি স্ট্রেইনের একটি।

ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা জানিয়েছেন, এই দুটি স্ট্রেইন সম্পর্কে যেসব তথ্য–উপাত্ত পেয়েছেন, তা এখনো পুরোপুরি প্রকাশিত হয়নি। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মুখপাত্র জ্যাসন ম্যাকডোনাল্ড বলেন, তাঁরা নতুন এই গবেষণার ওপর নজর রাখছেন।

ফোর্বসের খবরে বলা হয়েছে, ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে এই দুটি স্ট্রেইনের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দুটির মধ্যে একটির সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা আগের স্ট্রেইনের তুলনায় বেশি। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন। তাঁরা বলেছেন, নতুন স্ট্রেইনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের করোনার চলমান মহামারি আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে। তবে একই সঙ্গে তাঁরা এ–ও বলেছেন, এই নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণক্ষমতা কতটা বেশি, তা এখনো নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

নতুন এই ধরন দুটি নিয়ে যে গবেষণা নিবন্ধটি লেখা হয়েছে, তাঁর নেতৃত্বে ছিলেন চিকিৎসক ড্যান জোনেস। তিনি বলেন, ‘“কলাম্বাস স্ট্রেইনের”যে জিনগত বৈশিষ্ট্য, তা সম্পর্কে আমরা আগে থেকে অবগত ছিলাম। কিন্তু এটি আরও তিনবার পরিবর্তিত হয়ে নতুন এই রূপ পেয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটা জানি যে নতুন এই স্ট্রেইন যুক্তরাজ্য কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসে পরিবর্তিত হয়নি।’

ওহাইওর ওয়েক্সনার মেডিকেল সেন্টার গত বছরের মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে আসছে। পরে এই পদক্ষেপ আরও বাড়ানো হয়েছে। জোনেস বলেন, তাঁরা যেসব তথ্য–উপাত্ত পেয়েছেন, তা ওহাইওর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে পাঠিয়েছেন। তবে এখনো এসব তথ্য সিডিসির কাছে পাঠানো হয়নি। জোনেস আরও বলেন, ‘আমরা এখন এমন একটি পর্যায়ে আছি, যখন ভাইরাসের বড় ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে।’

এদিকে ওহাইওর স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ব্রুস ভ্যান্ডারফফ বলেন, নতুন এই স্ট্রেইন পাওয়ার ঘটনায় তাঁরা ‘অবাক নন’, কিন্তু তাঁরা উদ্বিগ্ন। এর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বেন। অনেককেই হাসপাতালে নিতে হবে, শেষ পর্যন্ত আরও বেশি মানুষ মারা যাবেন।

ব্রুস ভ্যান্ডারফফ বলেন, করোনাভাইরাসের যে স্ট্রেইনই আসুক, তা থেকে রক্ষা পেতে হলে সাধারণ মানুষকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, পারস্পরিক দূরত্ব ৬ ফুটের বেশি রাখতে হবে, জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলতে হবে, নিয়মিত হাত ধোয়া ও ঘরের আবদ্ধ স্থানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এই টিকা নতুন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে কাজ করবে কি না, এ প্রসঙ্গে গবেষণা নিবন্ধের আরেক লেখক পিটার মহলার বলেন, এমন কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি যে নতুন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে এই টিকা কাজ করে না।