করোনায় মৃত্যুহার ৩০ শতাংশ কমে গেছে: মার্কিন গবেষণা

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

করোনায় মৃত্যুহার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন গবেষকেরা। বেশ কিছু জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁরা এ সুখবর দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা বলছেন, উন্নত চিকিত্সার কারণে গত এপ্রিল থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মারাত্মক প্রমাণিত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় এক–তৃতীয়াংশ কমে গেছে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভোলিউশনের (আইএইচএমই) গবেষকেরা গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।

আইএইচএমই-এর পরিচালক ক্রিস্টোফার মারে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে মহামারির শুরুতে করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার ছিল দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু এখন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুহার দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এর অর্থ হচ্ছে, চিকিৎসকেরা রোগীদের চিকিৎসায় আরও উন্নত উপায় বের করতে পেরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রক্ত জমাট বাঁধা ঠেকানো ও অক্সিজেন দেওয়ার মতো নানা বিষয়। এর বাইরে কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে জেনেরিক স্টেরয়েড ডেক্সেমেথাসনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মহামারিতে মৃত্যুর হার বের করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে হিমশিম খেয়েছেন। কোভিড-১৯ রোগাক্রান্ত হলে শতকরা কতজনের মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তা বের করার চেষ্টা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে উপসর্গহীন রোগীদের অনেক সময় চিহ্নিত করার বিষয়টি।

আইএইচএমই-এর গবেষকেরা বলছেন, তাঁরা বয়স অনুপাতে বিভিন্ন জরিপ করে ইনফেকশন-ফ্যাটালিটি রেট (আইএফআর) বের করেছেন। তাতে দেখা গেছে, তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের কোভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।

গবেষক মারে বলেন, ‘আমরা জানি, ঝুঁকি বেশির ভাগ বয়সকেন্দ্রিক। প্রতি এক বছরের বয়সের ব্যবধানে মৃত্যুঝুঁকি ৯ শতাংশ করে বাড়তে দেখা যায়।’

কোভিড-১৯ পূর্বাভাসসংক্রান্ত প্রভাবশালী সূত্র সিয়াটল ইনস্টিটিউট বলছে, যে সম্প্রদায়ের মধ্যে স্থূলতার হার বেশি সেখানে কোভিড-১৯–এর মৃত্যুহার বেশি দেখা গেছে। তাদের আইএফআরের হিসাব অনুযায়ী, মহামারির শুরুর সময়ে তুলনায় এখন মৃত্যুঝুঁকি কমেছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসের দিকে করোনায় যে মৃত্যুঝুঁকি ছিল তা সেপ্টেম্বরের শুরুতে এসে দশিক ১৯ শতাংশ কমে গেছে।
তবে এটি নির্ভর করে বিভিন্ন স্থানের ওপর। যে সম্প্রদায়ের মধ্যে স্থূলতা বেশি সেখানে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার বিভাজনের ওপরেও মৃত্যুহার বাড়া-কমার বিষয়টি নির্ভর করে।

আইএইচএমই বলছে, তাদের বিশ্লেষণে ৩০০টির বেশি জরিপের বয়সসংক্রান্ত মৃত্যুহার হিসাব করা হয়েছে। এতে এপ্রিল ও মার্চ থেকে ৩০ শতাংশ মৃত্যুহার কমতে দেখা গেছে। তবে এই ইতিবাচক ধারা থাকলেও সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বাড়তে দেখা গেছে। এই গবেষকদের মডেল অনুযায়ী, ১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা ৪ লাখ ৩৯ হাজার হতে পারে এবং মধ্য জানুয়ারি নাগাদ দৈনিক মৃত্যু ২ হাজার ২০০ তে পৌঁছাতে পারে।