ক্যাপিটলের গ্যারেজে সেনাদের ঘুম, বাইডেনের দুঃখ প্রকাশ

গ্যারেজে শুয়ে আছেন সেনারা
ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

সদ্য বিদায় নেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের হাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবন রক্ষায় মোতায়েন করা ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের একটি গ্যারেজে ঘুমানোর কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর বিবিসির।

প্রকাশিত ওই সব ছবিতে দেখা যায়, ক্যাপিটল ভবনের কাছে বেশ কিছু সেনাসদস্য গাড়ি রাখার স্থানে (গ্যারেজ) শুয়ে আছেন। তাঁদের কেউ কেউ আবার কম্বল-লেপ মুড়ে ঘুমাচ্ছেন। চলতি মাসের শুরুতে কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প-সমর্থকেরা নজিরবিহীন হামলা চালান এবং পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়ান। এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান সামনে রেখে ভবনটিসহ ওয়াশিংটন ডিসিতে ২৫ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গতকাল বলেন, ক্যাপিটল ভবনে মোতায়েনকৃত সেনাদের মধ্যে ১০০ থেকে ২০০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, কংগ্রেস ভবনের কাছে গাড়ি রাখার একটি গ্যারেজে সেনাদের কেউ শুয়ে ও কেউ ঘুমিয়ে আছেন। এ ঘটনায় রাজনীতিবিদদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিতর্কের জেরে কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন গতকাল শুক্রবার ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর প্রধানকে ফোন করে ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। এ সময় ওই ঘটনা এড়াতে কী করা যেত, সে বিষয়ে জানতে চান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ছবি: এএফপি

ইতিমধ্যে, ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন কিছু কিছু সেনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের ধন্যবাদ জানান এবং হোয়াইট হাউস থেকে তাঁদের জন্য বিস্কুট নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা দেওয়ায় আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে আজ আমি এখানে এসেছি।’

কিন্তু বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে শত শত সেনাকে শুয়ে-বসে থাকতে দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকে। যে পরিস্থিতিতে তাঁদের সেখানে থাকতে দেখা গেছে, তাঁরা তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেখানে তাঁদের জন্য ছিল না শৌচাগারের মতো অত্যাবশ্যকীয় সুবিধা। অথচ কয়েক দিন ধরেই সতর্ক অবস্থায় ছিলেন তাঁরা।

গ্যারেজে সেনাদের অবস্থান করার ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর কংগ্রেস সদস্যরা অনলাইনে তাঁদের অসন্তোষের কথা জানান। তাঁদের কেউ কেউ তাঁদের কার্যালয়কে সেনাদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ করার প্রস্তাব দেন।

ক্যাপিটল ভবন থেকে ওই সেনাদের কেন সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া গেছে। তবে কিছু মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের ওই ভবন ছাড়ার নির্দেশ আসে।

আবদ্ধ ও সংকীর্ণ স্থানে গাদাগাদি করে সেনাদের রাখায় ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর মধ্যে করোনার সংক্রমণও ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গতকাল বলেন, ক্যাপিটল ভবনে মোতায়েনকৃত সেনাদের মধ্যে ১০০ থেকে ২০০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।

গ্যারেজে সেনাদের অবস্থান করার ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর কংগ্রেস সদস্যরা অনলাইনে তাঁদের অসন্তোষের কথা জানান। তাঁদের কেউ কেউ তাঁদের কার্যালয়কে সেনাদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ করার প্রস্তাব দেন।

নতুন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা চাক শুমার বলেছেন, সেনাদের ক্যাপিটল থেকে স্থানান্তর করার পদক্ষেপে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এ রকম ঘটনা আর কখনো ঘটবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

প্রকাশিত ওই সব ছবিতে দেখা যায়, ক্যাপিটল ভবনের কাছে বেশ কিছু সেনাসদস্য গাড়ি রাখার স্থানে (গ্যারেজ) শুয়ে আছেন। তাঁদের কেউ কেউ আবার কম্বল-লেপ মুড়ে ঘুমাচ্ছেন। চলতি মাসের শুরুতে কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প-সমর্থকেরা নজিরবিহীন হামলা চালান এবং পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়ান। এ ঘটনায় ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান সামনে রেখে ভবনটিসহ ওয়াশিংটন ডিসিতে ২৫ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়।

সিনেটের আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কমিটি ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে বলে জানিয়েছেন সিনেটর রয় ব্লান্ট।

এদিকে ন্যাশনাল গার্ড ও ক্যাপিটল পুলিশ গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, দায়িত্ব পালনের ফাঁকে সেনাদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ক্যাপিটল ভবনে যথেষ্ট জায়গার সংকুলান করতে যৌথভাবে কাজ করেছে তারা। আর যাঁরা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় নেই, তাঁদের জন্য বিভিন্ন হোটেলকক্ষ ও অন্যান্য স্থান বরাদ্দ করা হয়েছে।