‘গৃহহীন’ পেন্সের দিন কাটছে এখানে-সেখানে

সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স
ফাইল ছবি: রয়টার্স

সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এখন ‘গৃহহীন’। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে এখানে-সেখানে দিন কাটাচ্ছেন বলে খবর বেরিয়েছে।

নানা নাটকীয়তার পর ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট ও কমলা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প উপস্থিত ছিলেন না। তবে স্ত্রী ক্যারেন পেন্সকে নিয়ে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। বিজনেস ইনসাইডার জানায়, ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা হস্তান্তরের পর মাইক পেন্স সস্ত্রীক নিজ অঙ্গরাজ্য ইন্ডিয়ানায় ফিরে যান। কিন্তু সেখানে থাকার জন্য তাঁর নিজের কোনো বাড়ি নেই। ফলে, তিনি কখনো ভাইয়ের বাড়িতে, কখনো বন্ধুর বাড়িতে থাকছেন।

গত শতকের আশি ও নব্বইয়ের দশকে ইন্ডিয়ানায় নিজের বাড়ি ছিল মাইক পেন্সের। বাড়িটি বিক্রি করার পর তিনি কিছুদিন ভাড়া বাসায় থাকেন। ২০১৩ সালে তিনি গভর্নর নির্বাচিত হন। ২০১৬ সাল পর্যন্ত অঙ্গরাজ্য গভর্নরের বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকতেন মাইক পেন্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মাইক পেন্স ওয়াশিংটন ডিসিতে চলে আসেন। হোয়াইট হাউসের অদূরে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য নির্ধারিত বাসভবনে ওঠেন তিনি। সেখানে চার বছর কাটিয়ে এখন আবার নিজ অঙ্গরাজ্যে ফিরেছেন তিনি।

ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়ার আগে মাইক পেন্স জানিয়েছিলেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের আবাসন ছাড়ার পর তিনি স্থায়ীভাবে ইন্ডিয়ানায় নিজ অঙ্গরাজ্যে থাকবেন।

মাইক পেন্সের ঘনিষ্ঠজনদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ১০ বছর ধরে মাইক পেন্সের নিজ মালিকানায় কোনো ঘরবাড়ি নেই। এ অবস্থায় ইন্ডিয়ানায় ফিরে তিনি ‘গৃহহীন’ জীবন কাটাচ্ছেন। তিনি ইন্ডিয়ানার কলম্বাসে হয় তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে থাকছেন, না হয় অঙ্গরাজ্য গভর্নরের ছোট পরিসরের অবকাশ কেবিনে থাকছেন।

ঘনিষ্ঠজনদের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ইন্ডিয়ানায় স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা থেকে হয়তো সরে আসবেন মাইক পেন্স। কারণ, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাঁর। ফলে, তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরে ঘর ভাড়া করতে পারেন।

তবে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে মাইক পেন্সের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে বলে জানা গেছে।

৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে সহিংসতার সময় ট্রাম্প-সমর্থকেরা মাইক পেন্সকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁর টেবিলে এমন হুমকি দিয়ে নোটও রেখে যান কোনো একজন।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাইক পেন্স সীমিত নিরাপত্তা পাচ্ছেন। নিজের ও পরিবারের জন্য এই নিরাপত্তা পর্যাপ্ত কি না, তা নিয়ে মাইক পেন্সের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

ট্রাম্পের ক্ষমতার প্রায় পুরোটা সময় তাঁর প্রতি অনুগত ছিলেন মাইক পেন্স। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি ট্রাম্পের কথা শোনেননি। মাইক পেন্সের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ট্রাম্প। এ নিয়ে ট্রাম্পের রোষানলে পড়েন মাইক পেন্স। ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলের তাণ্ডবের সময় ট্রাম্প-সমর্থকেরা মাইক পেন্সকে খোঁজ করেন। ক্যাপিটল হিলে মাইক পেন্সের অফিস তছনছ করেন তাঁরা।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ১০ লাখ ডলারের সম্পদ আছে। এখন তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেব সম্মানী পান। এ ছাড়া বই লিখে, অধ্যাপনায় যোগ দিয়ে বছরে ছয় অঙ্কের বেশি আয়ের সুযোগ তাঁর রয়েছে।