জেনারেলদের কথা রাখেননি বাইডেন

গত মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটে অনুষ্ঠিত শুনানিতে জেনারেল মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি অংশ নেন।

জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ জেনারেল দাবি করেছেন, তাঁরা আফগানিস্তানে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রাখার ব্যাপারে সুপারিশ করেছিলেন। তবে সে কথা রাখেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারে তাঁর প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকেন। গতকাল বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটে অনুষ্ঠিত শুনানিতে জেনারেল মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এই দাবি করেন। তবে তাঁদের দাবির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথা মেলে না। কারণ, বাইডেন বলেছেন, এ ধরনের কোনো পরামর্শের কথা তিনি মনে করতে পারছেন না।

মার্ক মিলে মার্কিন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান। অন্যদিকে ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান। এই কমান্ডই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি দেখভাল করে।

মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি আফগানিস্তানে আড়াই হাজার সেনা রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তালেবান সরকার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের পড়াশোনা বন্ধের কথা অস্বীকার করেছে।

মার্ক মিলে ও ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জির ভাষ্য, গত মাসে আফগান সরকারকে শক্তিশালী করার জন্যই তাঁরা সেনা রাখার পরামর্শ দেন। তবে বাইডেন তাঁর পূর্বঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি টানেন।

মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিস কমিটির শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ জেনারেল নানা প্রশ্নের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনও সিনেটের শুনানিতে অংশ নেন। জেনারেল মার্ক মিলে বলেছেন, যতটা দ্রুততার সঙ্গে মার্কিন-সমর্থিত আফগান সরকারের পতন ঘটেছে, তা দেখে তাঁরা বিস্মিত হয়েছেন।

তালেবানের সঙ্গে যুদ্ধের আশঙ্কা ছিল

আফগানিস্তানে আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রাখার ব্যাপারে জেনারেলদের সুপারিশ ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে কোনো বিভক্তি ছিল না—বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি। জেন সাকি গত মঙ্গলবার বলেছেন, আফগানিস্তানে যদি যুক্তরাষ্ট্র ২ হাজার ৫০০ সেনা রেখে দিত, তবে তালেবানের সঙ্গে লড়াই বেধে যেত।

নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কথা অস্বীকার

আফগানিস্তানে তালেবান সরকার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের পড়াশোনা বন্ধের কথা অস্বীকার করেছে। জিও নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তানের সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আগের মতোই ছাত্রী ও শিক্ষকেরা হাজির হচ্ছেন। এর আগে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের শিক্ষা বন্ধের খবর প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস। গত সোমবার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বরাতে ওই খবর প্রকাশ করা হয়।

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, নিউইয়র্ক টাইমস যে টুইটের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছিল, তা ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা। ভুয়া অ্যাকাউন্ট মানুষকে ভুয়া খবরের দিকে নিয়ে যায়। তাঁরা বলেন, উপাচার্য ঘাইরাতের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো অ্যাকাউন্ট নেই।