টিকা নিলেই মিলবে ডলার

সিসি থেকে টিকা সিরিঞ্জে ভরছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী
ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রে জোরেশোরে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এ দেশেও কিছু মানুষ রয়েছেন, যাঁরা টিকা নিতে আগ্রহী নন। এই মানুষগুলোকে টিকাকেন্দ্রে টানতে তাই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহর কর্তৃপক্ষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে। টিকা নিলে কোনো শহর দিচ্ছে অর্থ, আবার কেউ দিচ্ছে পানীয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, নিউ জার্সি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে, চলতি মে মাসের মধ্যে এই অঙ্গরাজ্যের যেসব বাসিন্দা করোনার টিকার প্রথম ডোজ নেবেন, তাঁরা উপহার হিসেবে পানীয় পাবেন। টিকার সনদ দেখালেই পাওয়া যাবে এক বোতল পানীয়। কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যও একই সুযোগ দিচ্ছে।

মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট শহর কর্তৃপক্ষ ৫০ মার্কিন ডলারের প্রি–পেইড ডেবিট কার্ড দিচ্ছে। কেউ যদি শহরের কোনো বাসিন্দাকে টিকাকেন্দ্রে নিয়ে যান, তাহলে তিনি পাচ্ছেন এই ডেবিট কার্ড। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে টিকা নিলেই পাওয়া যাচ্ছে সুন্দর ব্যাগ। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া কর্তৃপক্ষও প্রণোদনার কথা ভাবছে।

এদিকে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ল্যারি হোগান গত সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর অঙ্গরাজ্যের কোনো সরকারি কর্মচারী টিকা নিলে ১০০ ডলার পাবেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘টিকা গ্রহণের গুরুত্ব বোঝাতেই এই প্রণোদনার ব্যবস্থা। মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকেও কর্মীদের টিকা নেওয়ার জন্য এ ধরনের প্রণোদনা দিতে আমরা উৎসাহিত করছি।’

যুক্তরাষ্ট্রে টিকা কর্মসূচি জোরদারে এমন প্রণোদনার পেছনে কারণও রয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যেভাবে টিকা কর্মসূচি চলছে, তাতে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন অসম্ভব। কিন্তু আপাতত যেকোনো দেশেই করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সিংহভাগ জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া জরুরি।

অবশ্য টিকা কর্মসূচি জোরদারে এমন প্রণোদনা কাজে আসবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে রোড আইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য গবেষক মেগান র‍্যানি বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেতের বাড়ির চেয়ে প্রণোদনাকে বেশি পছন্দ করি।’ তবে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি গ্রসম্যান স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক আর্থার ক্যাপলান বলেন, ‘আমার মনে হয়, টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে যে দ্বিধাটা মানুষের মনে কাজ করছে, তা অনেক গভীর। ১০০ ডলার বা এমন কিছু দিয়েই এ সমস্যা সমাধান কঠিন।’