টিকা নেননি তাই হলো না হার্টের অস্ত্রোপচার

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো দেশ বুস্টার দেওয়া প্রায় শেষ করে ফেলেছে। তবে করোনা টিকার বিরোধিতা করছেন অনেকে। নানা কারণে অনেকেই নিতে চান না টিকা। করোনার টিকা না নেওয়ায় নানা শাস্তির কথা শোনা যায়। কোথাও কোথাও পুরস্কারও দেওয়া হয়। তবে করোনা টিকা না নেওয়া গুরুতর অসুস্থ এক ব্যক্তির হৃদ্‌যন্ত্রে অস্ত্রোপচারে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল থেকে ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের একটি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে হার্টের জটিল সমস্যায় ভুগছেন ৩১ বছর বয়সী মার্কিন নাগরিক ডি জে ফার্গুসন। তাই হৃদ্‌যন্ত্র প্রতিস্থাপনের (হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট) জন্য তিনি বোস্টনের ব্রিগহাম অ্যান্ড উইমেনস হাসপাতালে যান। চিকিৎসার শুরুর সময়ে চিকিৎসকেরা যখন জানতে পারেন ডি জে ফার্গুসন করোনার টিকা নেননি। তখন তাঁরা অস্ত্রোপচারে অস্বীকৃতি জানান। চিকিৎসকদের কাছে রোগীর শারীরিক অবস্থার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে করোনা টিকা না নেওয়ার বিষয়টি।
করোনার দুই বছর পেরিয়েছে। ফার্গুসন এখনো টিকা নেননি। তিনি করোনার টিকায় বিশ্বাস করেন না। ফার্গুসনের এমন যুক্তিতে অবাক চিকিৎসকেরা। তাই তাঁকে বিনা চিকিৎসায় ফিরতে হয়েছে হাসপাতাল থেকে।

ফার্গুসনের বাবা ডেভিড সাংবাদিকেদের বলেন, ‘তার ছেলে করোনার টিকা নেয়নি। ফার্গুসনের করোনার টিকায় বিশ্বাস নেই। সে বলে এটি তার মৌলিক নীতির বিরুদ্ধে।’
অন্যদিকে বোস্টনের ব্রিগহাম অ্যান্ড উইমেন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তারা তাদের নিয়ম ও নীতি মেনেই কাজ করেছে। করোনা টিকা না নিলে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে না।

বিবিসিকে দেওয়া বিবৃতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, করোনা টিকা রোগীর নিজের জন্যই ভালো। টিকা নেওয়া থাকলে হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টে সফল হওয়ার সুযোগও বেশি থাকে। এ ছাড়া চাহিদার তুলনায় প্রতিস্থাপনযোগ্য অঙ্গের সংকট রয়েছে। তাই তাঁরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি। কারণ অঙ্গের সংকট এতটাই যে ঝুঁকি নিয়ে কোনো অঙ্গ নষ্ট করতে চায় না হাসপাতাল।

হাসপাতালের মুখপাত্র বলেছেন, হৃদ্‌যন্ত্র প্রতিস্থাপন করতে চাওয়া রোগীদের সফল অস্ত্রোপচারের জন্য করোনা টিকা এবং তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি বিষয় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য এক লাখ রোগী হাসপাতালের অপেক্ষমাণ তালিকায় আছেন। তবে প্রয়োজনীয় অঙ্গের সংকটের কারণে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা রোগীদের বেশির ভাগই আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে হৃদ্‌যন্ত্র প্রতিস্থাপন করাতে সক্ষম হবেন না।