ট্রাম্পকে দেওয়া সেই থেরাপিই এখন করোনার ওষুধ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে যাচ্ছেন। সঙ্গে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস
এএফপির ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে পরীক্ষামূলকভাবে অ্যান্টিবডি থেরাপি (দুটি অ্যান্টিবডির ককটেল) দেওয়া হয়েছিল। দেশটিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সেই চিকিৎসাপদ্ধতিই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। আজ রোববার বিবিসির খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অ্যান্টিবডির ওই ককটেল বা ওষুধটি তৈরি করেছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রিজেনারন ফার্মাসিউটিক্যালস। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার প্রথম দিকে রোগীকে ওই ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে চিকিৎসা দিলে সুফল পাওয়া যায় বলে গবেষণায় জানা গেছে। তবে করোনার সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রেও ওষুধটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে এফডিএ।

সাধারণত এফডিএ যেসব ওষুধের জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়, সেগুলোর পরীক্ষা চালানোর পাশাপাশি চিকিৎসায় ব্যবহারও করা যায়। এর আগে চলতি মাসের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এলি লিলির তৈরি করা একই ধরনের একটি ওষুধের জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয় এফডিএ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা চিকিৎসায় এটি আশার আলোর মতো ঘটনা।

রিজেনারন জানিয়েছে, তাদের ওষুধটি গবেষণাগারে প্রস্তুত দুটি অ্যান্টিবডির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। এগুলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার অনুকরণ করে সংক্রমণ ঘটানো ভাইরাসকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে তেমন কিছু নেই। তা ছাড়া এর কার্যকারিতা সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

রিজেনারন বলেছে, তারা চলতি মাসের শেষ নাগাদ প্রায় ৮০ হাজার করোনা রোগীর শরীরে প্রয়োগের মতো ওষুধের ডোজ উৎপাদন করতে পারবে। জানুয়ারির শেষে গিয়ে এই উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াবে ৩ লাখের মতো।

গত অক্টোবরে করোনা শনাক্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চিকিৎসায় অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি রিজেনারনের তৈরি দুই অ্যান্টিবডির ককটেল ওষুধটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ট্রাম্প ছাড়াও আরও কিছু রোগীর শরীরে এটি প্রয়োগ করা হয়। সুস্থ হয়ে ট্রাম্প ওই অ্যান্টিবডি থেরাপির প্রশংসা করেন। তবে এফডিএ গুরুতর অসুস্থ কিংবা অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে, এমন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধটি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি।

করোনা চিকিৎসায় ওষুধ উদ্ভাবনের চেষ্টার পাশাপাশি নিরাপদ ও কার্যকর টিকা উদ্ভাবনের কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার সম্ভাব্য টিকা, যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ও ফাইজারের টিকাসহ বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য টিকার কার্যকারিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফাইজার ও মডার্নার দুটি টিকাই প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।