তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের একাংশ, ২১ জনের মৃত্যু

তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য। ছবিটি হাউসটনের একটি এলাকারছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গতকাল মঙ্গলবারের ঝড়ে এসব রাজ্যে মারা গেছেন অন্তত ২১ জন। টেক্সাসে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন লাখো মানুষ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তুষারঝড়ের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের এক বড় অংশে তীব্র ঠান্ডায় এখন জবুথবু অবস্থা। প্রতিকূল আবহাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে কোভিড-১৯-এর টিকাদানকেন্দ্রগুলো। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে টিকার সরবরাহ। সপ্তাহান্তের আগে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আশা নেই বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ইতিমধ্যে গ্রিড বারবার অচল হয়ে লাখো মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন টেক্সাসের কর্মকর্তারা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় অচল হয়ে পড়েছে বিশাল আকারের বিদ্যুৎ টার্বাইনগুলো। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না।

তুষারে ঢাকা গাড়ি পরিষ্কার করছেন বাসিন্দারা। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে
ছবি: এএফপি

পুলিশ ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, টেক্সাস, লুইজিয়ানা, কেনটাকি ও মিজৌরিতে মারা গেছেন অন্তত ২১ জন। এর মধ্যে টেক্সাসের সুগার ল্যান্ডের একটি বাড়িতে আগুন লেগে মারা যান চারজন। ওই সময় বাড়িটিতে বিদ্যুৎ ছিল না।

হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর গভর্নরদের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যেকোনো জরুরি সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।

হাউসটনের মেয়র সিলভেস্টার টার্নার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাঁর শহরে ১৩ লাখ মানুষ মঙ্গলবার থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও খোলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এখন যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়া দরকার। এটা এখন এক নম্বর অগ্রাধিকারের বিষয়!’

টেক্সাসের পরিস্থিতি সামাল দিতে ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য পৌঁছে দিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। যে সময় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়, তখন টেক্সাসের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ২ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। রাজ্য গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা আবার চালু করতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা কাজ করছেন।

তুষারপাতের কারণে টেক্সাসে তাপমাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে এক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে অন্য এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট দ্য পাওয়ার আউটেজ ডট ইউএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ৪১ লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ-সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হন।

দক্ষিণ টেক্সাসের কর্মকর্তারা শহরবাসীকে বাড়ির ভেতর গ্রিল বা প্রোপেন হিটার ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। বাড়ির ভেতর উষ্ণ রাখতে এসব ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন লোকজন।

টার্নার বলেন, হাউসটনে টিকাদানকেন্দ্রগুলো আজ বুধবারও বন্ধ থাকবে। কাল বৃহস্পতিবার এগুলো খুলতে পারে। আর টেক্সাসের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বলেছে, রাজ্যে টিকার সরবরাহ প্রাপ্তি বিলম্বিত হবে।

টেক্সাসের পরিস্থিতি সামাল দিতে ও কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য পৌঁছে দিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। যে সময় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়, তখন টেক্সাসের বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের ২ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। রাজ্য গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা আবার চালু করতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা কাজ করছেন।