নিকি হ্যালির ভিন্ন সুর

নিকি হ্যালি
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন নিকি হ্যালি। ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাটা রিপাবলিকান পার্টির জন্য মঙ্গল হবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। এখন সেই নিকির কণ্ঠেই ভিন্ন সুর। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প প্রার্থী হলে তাঁকে সমর্থন দেবেন বলে জানিয়েছেন নিকি। একই সঙ্গে নিকি বলেছেন, ট্রাম্প প্রার্থী হলে তিনি নিজেকে সরিয়ে নেবেন। তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়বেন না। নিকির একটি সাক্ষাৎকারের বরাত দিয়ে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এই তথ্য দিয়েছে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর নিকি। তিনি রিপাবলিকান পার্টির তারকা রাজনীতিবিদ। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত ছিলেন নিকি। তাঁকে জাতিসংঘে মার্কিন দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। জাতিসংঘে ট্রাম্পের নীতি বাস্তবায়নে নিকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম আলোচনার শীর্ষে রয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরেক দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরতে চান। তিনি তাঁর এই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তবে ট্রাম্প এখনো সরাসরি বলেননি যে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি একধরনের পরোক্ষ ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্পের প্রতি তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টির অধিকাংশ নেতার এখনো আস্থা রয়েছে। ক্ষমতা ছাড়ার পরও দলকে কার্যত ট্রাম্পই নিয়ন্ত্রণ করছেন।

গত ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের উসকানিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়। এই হামলার ঘটনার ট্রাম্পের সমালোচনা করেছিলেন নিকি। তখন এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা রিপাবলিকান পার্টির জন্য ভালো হবে।

ট্রাম্প নিজেই নিজেকে ক্রমে বিচ্ছিন্ন করেছেন বলেও নিকি মন্তব্য করেছিলেন। যদিও পরে দেখা যায়, ট্রাম্প বিচ্ছিন্ন হয়ে যাননি; বরং আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে রিপাবলিকান পার্টির ওপর এখন তাঁর প্রভাব বেশি। তাঁকে ঘিরেই থাকছেন রিপাবলিকান নেতারা।

ট্রাম্প পরবর্তী সময়ে কোনো ফেডারেল পদে নির্বাচন করতে পারবেন না বলেও তখন নিকি মন্তব্য করেছিলেন।

তবে এখন নিকি বলেছেন, ট্রাম্প যদি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন, তবে তাঁকে সমর্থন করবেন তিনি। ট্রাম্প প্রার্থী হলে তিনি হবেন না। এ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। একটি বার্তা সংস্থাকে এসব কথা বলেন নিকি।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বেশ কিছুদিন যোগাযোগ না থাকলেও তাঁর সঙ্গে ভালো কর্মসম্পর্ক রয়েছে বলে জানান নিকি। জাতিসংঘে তাঁকে নিজের মতো করে কাজ করতে দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির অর্জনগুলো চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে—এমনটা দেখতে চান না নিকি। তা ছাড়া তিনি নিজেদের অর্জনকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে চান বলে জানান।

সাবেক ট্রাম্প প্রশাসনে যাঁরা প্রভাবশালী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একমাত্র নিকিই যে ২০২৪ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন, বিষয়টি এমন নয়। ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করেছেন। তিনি সভা-সমিতি করে চলছেন।

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসেন্টিস, সাউথ ডাকোটার গভর্নর ক্রিস্টি নওয়েম, সিনেটর মার্কো রুবিও, সিনেটর রিক স্কট ও সিনেটর টম কটনের নাম এখন আলোচিত হচ্ছে। ট্রাম্প তাঁর প্রার্থিতা নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করলে শেষ পর্যন্ত কজন আলোচনায় থাকবেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।