পুতিনের ‘সীমা বেঁধে’ দেবেন বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে লাল দাগ টেনে দিতে যাচ্ছেন তিনি। গত সোমবার ন্যাটোর মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে মস্কো ও বেইজিংয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে পথচলার ঘোষণা দেন বাইডেন। এরপর তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক নিয়েও কথা বলেন।

আগামীকাল বুধবার জেনেভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বাইডেন বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তাঁর যোগ্য প্রতিপক্ষ।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া চারটার দিকে জেনেভায় পৌঁছেছেন বাইডেন। মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সর্বোচ্চ উদ্বেগের মধ্যেই দুই প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ ঘটতে যাচ্ছে।

২০১৮ সালের পর দুই দেশের প্রধানের সাক্ষাৎ ঘটবে আগামীকাল। এর আগে বাইডেনের পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সর্বেশষ ২০১৮ সালে হেলসিংকিতে সাক্ষাৎ ঘটেছিল পুতিনের।

ন্যাটোর সম্মেলনে বক্তব্যের সোমবার পর বাইডেন বলেছেন, ‘আমি রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে যাচ্ছি না। তবে রাশিয়া যদি তাদের ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায়, তবে আমরা তার জবাব দেব।’ তিনি পুতিনকে ‘কঠোর’ নেতা হিসেবেও উল্লেখ করেন।

পশ্চিমা মিত্রদের দূরত্ব কমানোর বার্তা নিয়ে ব্রাসেলসে যান বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি পূর্বসূরি ট্রাম্পের একা চলার নীতি থেকে সরে এসেছেন।

সম্মেলন শুরুর আগে এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রয়টার্সকে বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কিছু কড়া বার্তা দিতে পারেন।

ইউরোপীয় সীমানায় ইউক্রেন, ক্রিমিয়ায় রুশ সেনাদের উপস্থিতি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাইবার হামলায় রুশসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ, এমন নানা বিষয়ে রাশিয়ার প্রতি ন্যাটোর অবিশ্বাস বেড়েছে। ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক এখন সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে।

রাশিয়াও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকিতে ফেলার অভিযোগ করেছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দুই নেতার মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মধ্যে রয়েছে সাইবার হামলা, মানবাধিকার, ইউক্রেন, বেলারুশ প্রভৃতি প্রসঙ্গ।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উভয় দেশের প্রেসিডেন্ট আলোচনা করবেন। তাঁরা আলোচনা করবেন কৌশলগত স্থিতিশীলতার বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। বিভিন্ন আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনের উপায় নিয়ে তাঁরা কথা বলবেন। করোনা মহামারি মোকাবিলাসহ আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে তাঁরা বৈঠকে আলাপ করবেন।

খুব কম বিশেষজ্ঞই বাইডেন-পুতিন বৈঠক থেকে নাটকীয় কোনো ফল আশা করছেন। কেননা, বাইডেন কেবল ক্রেমলিনের সঙ্গে একটি কার্যনির্বাহী সম্পর্ক স্থাপন করতে চান। অন্যদিকে রাশিয়া ঠিক কী চায়, তা অস্পষ্ট।

চার্লস কুপচানের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এখন যে সম্পর্ক বিরাজ করছে, তার উন্নতি ঘটাতে একটি ইচ্ছা উভয় পক্ষেই লক্ষ করা যাচ্ছে। তবে বাইডেন-পুতিনের বৈঠকের ফলাফল নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা ঠিক হবে না। রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যদি নতুন করে কোনো ধরনের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হয়, তার জন্য বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে। আর তাতে যথেষ্ট সময়ও লাগবে।