পেনসিলভানিয়ায় ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন অঙ্গরাজ্যের এক বিচারক।

অঙ্গরাজ্যটির সবগুলো কাউন্টির সার্টিফিকেশন হয়ে যাওয়ার পর গতকাল বুধবার ওই বিচারক এমন নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন।

পেনসিলভানিয়ায় ডাকযোগে গ্রহণ করা ভোট গণনা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অঙ্গরাজ্যের আদালতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানানো হয়েছিল। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা মাইক কেলিসহ কয়েকজন ট্রাম্প-সমর্থক ভিন্ন আরেকটি মামলা করেন। এই মামলায় ভোট সার্টিফিকেশনের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

মামলায় বলা হয়, অঙ্গরাজ্যের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন করেছে। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের সংবিধান ডাক ভোটের ঢালাও অনুমোদন দেয় না। সংবিধান সংশোধন না করে শুধু অঙ্গরাজ্য সভায় আইন করে এমন ভোট গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই।

বিচারক পেট্রিসিয়া ম্যাককুলহ ট্রাম্প-সমর্থকদের আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর আগামী শুক্রবার পর্যন্ত অঙ্গরাজ্যের ভোট সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার আদেশ জারি করেন। শুক্রবার আদালতে এ ব্যাপারে পূর্ণ শুনানি হবে বলে জানানো হয়।

অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল জোসে শাপিরো এক টুইট বার্তায় বলেন, বিচারকের এমন আদেশে নির্বাচনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ, অঙ্গরাজ্যের ভোট ইতিমধ্যে সার্টিফাই করা হয়ে গেছে। তারপরও অঙ্গরাজ্য থেকে এমন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

জোসে শাপিরোর এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে নোটিশ অব আপিল আবেদন করা হয়।

পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা ভোট জালিয়াতি নিয়ে নিজেরা একটি শুনানি গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক গেটিসবার্গ নগরীতে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের এই শুনানিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানিসহ অন্যান্য প্রচার কর্মকর্তা যোগ দেন। শুনানি চলাকালীন কিছু ভোটার উপস্থিত হয়ে তাঁরা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন। এ সময় কিছু ট্রাম্প-সমর্থক শুনানিস্থলের বাইরে ভোট বাতিলের জন্য স্লোগান দেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিজেরও পেনসিলভানিয়ার শুনানির সময় সশরীরে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে শুনানি চলাকালে তিনি ফোন করেন। খোলা স্পিকারে শুনানি গ্রহণের জন্য নিজ দলের আইনপ্রণেতাদের তিনি ধন্যবাদ জানান। আবার বলেন, ভোট জালিয়াতি হয়েছে। এ নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে হবে।

অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা চাচ্ছেন, আদালতের মাধ্যমে ভোটের সার্টিফিকেশন বাতিলের নির্দেশ নিয়ে আসা। এরপর তাঁরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন, অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট কোন প্রার্থীর পক্ষে যাবে। ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের হোয়াইট হাউসে ডেকে পাঠিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিশিগানেও আগামী সপ্তাহে এমন একটি শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন। এমন শুনানিতে তাঁর নিজের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে।

নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার অভিপ্রায় থেকে ট্রাম্পের সরে দাঁড়ানোর কোনো লক্ষণ নেই। যদিও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুরোদমে ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দৈনিক নিরাপত্তা ব্রিফিংসহ অন্যান্য তথ্য দিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।