ফ্লয়েড হত্যায় সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে ২২ বছর কারাদণ্ড

সাজাপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন।
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) হত্যার দায়ে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিনকে সাড়ে ২২ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, এই মামলার কৌঁসুলি চৌভিনের ৩০ বছর কারাদণ্ড চেয়েছিলেন। আর চৌভিনের আইনজীবী চেয়েছিলেন তাকে মুক্তি দেওয়া হোক। কিন্তু চৌভিন গত এপ্রিলে দোষী প্রমাণিত হন। চৌভিনের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণ হয়। এগুলো হলো ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুন, ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুন এবং ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ নরহত্যা।

এই রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, ‘ফ্লয়েডের পরিবার যে যন্ত্রণা পোহাচ্ছে সেই দিকে অবশ্যই আমাদের নজর দিতে হবে।’ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে সারা দেশে যে বেদনাহত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল তাও উল্লেখ করেছেন আদালত।

পুরো রায় পড়ে শোনাননি আদালত। আদালত বলেন, এই রায় একটি আইনি বিশ্লেষণ। আবেগ কিংবা কারও প্রতি সদয় হয়ে এই রায় দেওয়া হয়নি।

তবে রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন। তিনি বলেন, চৌভিনকে যে সাজা দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।

এদিকে চৌভিন আদালতে বলেন, ‘আমি ফ্লয়েডের পরিবারের প্রতি শোক জ্ঞাপন করছি।’ তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও কিছু তথ্য বেরিয়ে আসবে। আমি আশা করি, এতে আপনার মানসিকভাবে শান্তি পাবেন।’ যদিও ফ্লয়েড মামলা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কী তথ্য আসবে তা জানাননি চৌভিন।

চৌভিন কারাগারে আছেন। এর আগে মিনেসোটার হেনেপিন কাউন্টির একটি আদালত গত ২১ এপ্রিল দোষী সাব্যস্ত করেন। তখন আদালত বলেছিলেন, পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে চৌভিনের কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হবে। সেই রায় ঘোষণা করা হলো শুক্রবার।

জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগ এনে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) গত বছরের ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের পর ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন চৌভিন। এ সময় ফ্লয়েড বলতে থাকেন, ‘দয়া করুন, আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমাকে মারবেন না।’ এক পথচারী ওই সময় ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জর্জ ফ্লয়েড মিনিয়াপোলিস শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

এই হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন স্থানে লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া পরবর্তীতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।