বিশ্বে করোনা শনাক্ত সাড়ে ৪ কোটির কাছাকাছি

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৪ কোটির কাছাকাছি পৌঁছেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে আজ শুক্রবার সকালে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৮ হাজার ৪৭৭।

জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, একই সময় বিশ্বে করোনায় মোট মারা গেছেন ১১ লাখ ৭৯ হাজার ২৭৮ জন।

বিশ্বে করোনা থেকে সেরে ওঠা মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০৮।
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৭। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৬ জন।

ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়। ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ লাখ ৪০ হাজার ২০৩। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৫২৭ জন।

ব্রাজিল আছে তৃতীয় অবস্থানে। ব্রাজিলে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৮ হাজার ২৭০। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫৬ জন।
তালিকায় রাশিয়ার অবস্থান চতুর্থ। ফ্রান্স পঞ্চম। স্পেন ষষ্ঠ। আর্জেন্টিনা সপ্তম। কলম্বিয়া অষ্টম। যুক্তরাজ্য নবম। মেক্সিকো দশম।
তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৮ তম।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

চীনে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যু হয় ৯ জানুয়ারি। তবে তার ঘোষণা আসে ১১ জানুয়ারি।

১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে। পরে বিভিন্ন দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

২ ফেব্রুয়ারি চীনের বাইরে করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ফিলিপাইনে।

১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সৃষ্ট রোগের নামকরণ করে ‘কোভিড-১৯ ’।

১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৪ হাজার ৭৬০ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৮৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ২৮১ জন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। এর ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় সরকার।

বাংলাদেশে মার্চের শুরুর দিকে সংক্রমণ শনাক্ত হলেও দ্রুত ছড়াতে শুরু করে মে মাসের মাঝামাঝি গিয়ে। জুনে সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করে।

বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত আরও ১ হাজার ৬৮১ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। একই সময় করোনায় মারা গেছেন ২৫ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ, ১ জন নারী। দেশে এখন পর্যন্ত সংক্রমণ বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৪ হাজার ২৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বুধবারের তুলনায় মৃত্যু ও নতুন রোগী বেড়েছে। বুধবার মারা যান ২৩ জন। করোনা শনাক্ত হয় ১ হাজার ৪৯৩ জনের।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, দেশে করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে সরকার আশঙ্কা করছে, শীতে আবার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, টিকা আসার আগপর্যন্ত নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের মূল উপায় হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। মাস্ক পরা, কিছু সময় পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা।
কিন্তু এই স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার ক্ষেত্রে ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে। এতে সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।