মাঝ আকাশে করোনা শনাক্ত, টয়লেটে ৫ ঘণ্টা ‘সেলফ আইসোলেশন’

উড়োজাহাজ
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

মাঝ আকাশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজের শৌচাগারে পাঁচ ঘণ্টা স্বেচ্ছা সঙ্গনিরোধে (সেলফ আইসোলেশন) থাকার কথা জানিয়েছেন এক নারী যাত্রী। বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো থেকে আইসল্যান্ডের রেইকিয়াভিকগামী ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে।

ওই নারী যাত্রীর নাম মারিসা ফোটিও। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন স্কুলশিক্ষক।
মারিসা জানান, উড়োজাহাজে ভ্রমণকালে তিনি গলাব্যথা অনুভব করেন। চলন্ত উড়োজাহাজে বসেই তিনি তাঁর সঙ্গে থাকা একটি র‍্যাপিড টেস্ট কিট দিয়ে করোনা পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে।

মাঝ আকাশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজের অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে নিজেকে পৃথক (আইসোলেশন) রাখার সিদ্ধান্ত নেন মারিসা।

স্বেচ্ছা সঙ্গনিরোধের জন্য উড়োজাহাজের শৌচাগার (টয়লেট) ছাড়া আর কোনো ফাঁকা জায়গা খুঁজে পাননি মারিসা। ফলে উড়োজাহাজ ভ্রমণের বাকি সময়টুকু সেখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মারিসা পুরো পাঁচ ঘণ্টা উড়োজাহাজের শৌচাগারে স্বেচ্ছা সঙ্গনিরোধে কাটান। সেখানে অবস্থানকালে তাঁকে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করেন উড়োজাহাজের এক নারী অ্যাটেনডেন্ট।

এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মারিসা বলেন, ‘ফ্লাইটে ১৫০ জন আরোহী ছিলেন। আমার থেকে তাঁদের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ভয়টাই আমি বেশি পেয়েছিলাম।’

আইসল্যান্ড এয়ারের ওই উড়োজাহাজের শৌচাগার থেকে টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন মারিসা। ভিডিওটি ৪০ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে।
শৌচাগারে স্বেচ্ছা সঙ্গনিরোধে থাকার কঠিন সময়ে সহযোগিতার জন্য ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের প্রশংসা করেন মারিসা।

এনবিসিকে মারিসা বলেন, ‘পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টার জন্য খাবার-পানীয়সহ আমার যা কিছু প্রয়োজন হয়েছে, তার সবকিছুই ওই ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সরবরাহ করেছেন। সার্বক্ষণিক আমার অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। আমি ঠিক হয়ে যাব বলে আশ্বস্ত করেছেন।’

মারিসা জানান, আইসল্যান্ডে পৌঁছানোর পর একটি হোটেলে সঙ্গনিরোধে ছিলেন তিনি।

উড়োজাহাজে ওঠার আগে মারিসাকে করোনা পরীক্ষা করতে হয়েছিল কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার অমিক্রন ধরনের প্রকোপ চলছে। অমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে দেশে দেশে আবার বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, করোনার অমিক্রন ধরন অপেক্ষাকৃত কম প্রাণঘাতী হলেও তা অতি সংক্রামক।

সাত দিনের পরিস্থিতির আলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষের নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। মহামারি শুরুর পর এটি দেশটিতে করোনা শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা।