মানুষের মতো সর্দি-কাশিতে ভুগত ডাইনোসরেরাও

সরোপড ডাইনোসররা সে সময় পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বড় প্রাণীদের মধ্যে ছিল একটিছবি: রয়টার্স

কোটি বছর আগের ডাইনোসরদের নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহের শেষ নেই। ডাইনোসর পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে, তবে প্রাণীটিকে নিয়ে গবেষণা শেষ হয়নি। সে ধারাবাহিকতায় এবার নতুন তথ্য সামনে এসেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের মতো সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতো ডাইনোসররাও। খবর রয়টার্সের
বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্টিফিক রিপোর্টস-এ প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা অঙ্গরাজ্যে প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে জুরাসিক যুগের একটি ডাইনোসরের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। লম্বা গলার, বিশাল দেহী এই ডাইনোসরকে ডাকা হচ্ছে ‘ডলি’ নামে।

ডলির জীবাশ্ম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সামনে এসেছে, জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ, যা দেখা দিয়েছিল সেটির শরীরে। একপর্যায়ে তা আক্রান্ত করেছিল হাড়কেও। এর জেরেই ডাইনোসরটির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডলির জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডাইনোসরটি ছত্রাকের সংক্রমণে ভুগছিল বলে দেখা গেছে। এটি অনেকটা ফুসফুসে অ্যাসপারগিলোসিস সংক্রমণের মতোই। এখনকার দিনে পাখি ও সরীসৃপের শরীরে এই সংক্রমণ দেখা যায়। অ্যাসপারগিলোসিস সংক্রমণ প্রায়ই মারাত্মক আকার ধারণ করে। অনেক সময় তা হাড়কেও আক্রান্ত করে।

সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত গবেষণার লেখকদের মধ্যে একজন লরেন্স উইটমার। তিনি বলেন, মানুষের শরীরে শ্বসনতন্ত্রের সংক্রমণের ফলে যেসব উপসর্গ দেখা যায়, একই ধরনের উপসর্গ ডলির শরীরে দেখা দিয়েছিল।

ডাইনোসরের ফুসফুসের সংক্রমণের বিষয়টি নতুন হলেও সেগুলো অন্য প্রাণীদের মতোই নানা রোগে আক্রান্ত হতো বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। তবে জীবাশ্মতে হাড়, দাঁত ও নখ ছাড়া নরম টিস্যু না থাকায় এই ধারণার সপক্ষে তেমন প্রমাণ পাওয়া যায় না।

এরপরও ডাইনোসররা হাড় ভাঙা, দাঁতের সমস্যা, হাড়ে রক্তবাহিত সংক্রমণ, বাত এমনকি হাড়ের ক্যানসারের মতো শারীরিক জটিলতায় ভুগত বলে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ডলি সরোপড গোত্রের ডাইনোসর হলেও এর প্রজাতি সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। সরোপড ডাইনোসররা তৃণভোজী ছিল। লম্বা গলা, বিশাল লেজ, ছোট্ট মাথা আর চার পায়ের এ ডাইনোসরগুলো সে সময়কার পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বড় প্রাণী ছিল।

মন্টানার গ্রেট প্লেইনস ডাইনোসর মিউজিয়ামের জীবাশ্ম বিজ্ঞানবিষয়ক পরিচালক ক্যারি উডরাফ বলেন, ডলির উচ্চতা ছিল প্রায় ৬০ ফুট। ওজন ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার কেজির মধ্যে। মৃত্যুর সময় ডলির বয়স ছিল ১৫ থেকে ২০ বছরের মাঝামাঝি।