যুক্তরাষ্ট্রে জামাল খাসোগির নামে রাস্তার নামকরণ

সৌদির সাংবাদিক জামাল খাসোগি
ছবি: এএফপি

সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল। সেই সম্পর্ক ঠিক করতে সৌদি আরব সফরের পরিকল্পনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সফরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। কিন্তু তার আগেই ওয়াশিংটনে সৌদি আরব দূতাবাসের সামনের একটি রাস্তা জামাল খাসোগির নামে নামকরণ করা হয়েছে। গত বুধবার ওয়াশিংটনের স্থানীয় সরকার ওই রাস্তার নামকরণ করে ‘জামাল খাসোগি ওয়ে’।

স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাসোগির সম্মানে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া কাউন্সিল সর্বসম্মতভাবে নিউ হ্যাম্পশায়ার অ্যাভিনিউর নাম বদল করে খাসোগির নামে রাখার পক্ষে মত দেয়। ওই কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ফিল মেন্ডেলসন বলেন, ‘রাস্তাটি জামাল খাসোগির স্মৃতি স্মারক হিসেবে কাজ করবে।’

বাইডেনের সৌদি আরব সফরের সময়সূচি ঘোষণার প্রাক্কালেই সড়কের নামকরণ করার খবরটি সামনে এল। আগামী মাসের ওই সফরে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডে অনুমোদন দিয়েছিলেন যুবরাজ। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। সেখানে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর লাশ কেটে টুকরা টুকরা করে গায়েব করে দেওয়া হয়। তাঁর দেহাবশেষ আর পাওয়া যায়নি।

সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কট্টর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাসোগি। তাঁকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে সন্দেহ করা হয়।

জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডসহ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিলেন। ওই অভিযোগে তিনি সৌদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে একঘরে করতে উদ্যোগ নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

এদিকে শান্তিতে নোবেল জয়ী ইয়েমেনের অধিকারকর্মী তাওয়াক্কোল কারমান বাইডেনের সৌদি সফরের সমালোচনা করে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি ত্যাগ করেছেন বাইডেন।’

‘ডেমোক্রেসি ফর দ্য আরব ওয়ার্ল্ড নাউ’-এর নির্বাহী পরিচালক রাহ লিয়া হুইটসন বাইডেনের এই সফরের সমালোচনা করে বলেন, এটা বাইডেনের নির্লজ্জ আত্মসমর্পণ।

এর আগে বাইডেন প্রশাসনও সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল। তবে এখন গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ বিবেচনায় দেশটির ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছে তারা। কারণ, বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্পাদনকারী দেশ সৌদি আরব। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজার এখন অস্থির।

আরও পড়ুন