যুক্তরাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলায় চীনের সুবিধা

ওয়াশিংটনের বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুবিধা নিতে চায় বেইজিং
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে চলমান বিশৃঙ্খলায় চীন লাভবান হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সিএনএন অনলাইনে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এ কথা বলা হয়।

বিশ্লেষণে বলা হয়, ২০২১ সাল বেইজিংয়ের জন্য একটি ভালো বছর হতে যাচ্ছে। চীনে কয়েক মাস ধরে করোনার সংক্রমণ যৎসামান্য। ফলে বাকি বিশ্ব যখন করোনা মহামারির সঙ্গে লড়ছে, তখন চীন তার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি দীর্ঘদিনের ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে চলমান বিশৃঙ্খলা চীনের এই উদ্দেশ্য অর্জনের বিষয়টিকে সম্ভব করে তুলছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন অনুষ্ঠান ও নতুন প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণের মধ্যে একটা বড় সময়গত ব্যবধান রয়েছে। এই বিলম্বের বিষয়টি নীতির ক্ষেত্রে সব সময়ই একধরনের বিভ্রান্ত তৈরি করে। এ ছাড়া তা সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি করে।

তবে এবারের নির্বাচনে পরাজয় না মেনে ট্রাম্পের আগ্রাসী আচরণ ও উল্টো দিকে কিছু রিপাবলিকানদের ফল মেনে নেওয়ার বিষয়টি একে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে—যেন তার শেষ নেই।

গত বুধবার রাতের ঘটনা তার উদাহরণ। এদিন ট্রাম্প-সমর্থকেরা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে হামলা চালান। এ সময় কংগ্রেসের ভেতরে থাকা আইনপ্রণেতারা নিরাপদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে কংগ্রেস খালি করে দেওয়া হয়।

ওয়াশিংটনের পরিমণ্ডলে এখন অভ্যুত্থান-চেষ্টা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মতো কথাবার্তা বেশি আলোচিত হচ্ছে। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কী হচ্ছে, সে বিষয়ে ওয়াশিংটনের অনেকেরই যথেষ্ট মনোযোগ নেই।

সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বড় ধরনের বিনিয়োগ চুক্তি করেছে চীন। হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন জোরদার করেছে বেইজিং। সেখানে আইনপ্রণেতাসহ অনেক গণতন্ত্রপন্থীকে গণহারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উভয় ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তিনি এখনো ক্ষমতা হাতে পাননি। ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নেবেন। আর দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এদিকে তাকানোর সময় নেই। তিনি এত দিন নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

ওয়াশিংটনের বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সুবিধা নিতে চায় চীন। চীন তার প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়িয়ে চলছে। ওয়াশিংটনে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও বিভক্তিতে এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে।