যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাইবার হামলা

হামলার পেছনে রাশিয়ার হাত রয়েছে বলে অনেকে সন্দেহ করছেন। তবে মস্কো এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি ও গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার চেষ্টা হয়েছে। এসব হামলা নিয়ে নানা মহলে উদ্বেগের পর গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন জ্বালানি দপ্তরও সাইবার হামলার কথা নিশ্চিত করেছে। এই হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হামলা বলেও উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি দপ্তর দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। ফলে এ রকম সাইবার হামলা পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকির। জ্বালানি দপ্তর বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্রের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

জ্বালানি দপ্তরের ওই স্বীকারোক্তির আগে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট জানায়, তাদের সিস্টেমে ক্ষতিকর সফটওয়্যারের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের ৪০টির বেশি সেবাগ্রহীতা সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেই তালিকায় সরকারি প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো কানাডা, মেক্সিকো, বেলজিয়াম, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে।

এসব হামলার পেছনে রাশিয়ার সরকারের হাত রয়েছে বলে অনেকে সন্দেহ করছেন। তবে দেশটি তা অস্বীকার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ, বাণিজ্য দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে ছিল। এক মাস ধরে এসব বড় হামলার চেষ্টা চলে। তবে এসব হামলার কথা এত দিন প্রকাশ করা হয়নি। গত রোববার প্রথমবারের মতো ওই হামলার কথা স্বীকার করেন মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা। বড় পরিসরের এই সাইবার হামলার বিষয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি সাইবার নিরাপত্তাকে তাঁর প্রশাসনের ‘শীর্ষ অগ্রাধিকার’ বিষয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়েই গুরুত্বপূর্ণ সাইবার হামলা আমাদের প্রতিহত করতে হবে। আমরা সেটাই করব। অন্যান্য পদক্ষেপও নেওয়া হবে। আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে এই জঘন্য হামলার জন্য দায়ীদের বিরুব্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সাইবার সংস্থা সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার এজেন্সি বৃহস্পতিবার কড়া সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করার কাজটি খুবই জটিল ও চ্যালেঞ্জের হবে। সংস্থাটি বলেছে, মার্চ থেকে হ্যাংকিং শুরু হয়। সাইবার হামলায় ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আপস করেছে এবং এই ক্ষতি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। তবে কী ধরনের তথ্য চুরি বা উন্মুক্ত হয়েছে, সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি সংস্থাটি।