সবচেয়ে অপরিণত শিশু

রিচার্ড স্কট উইলিয়াম হাচিনসন।
ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট সময়ের ১৩১ দিন আগে জন্মগ্রহণ করেছিল সে। ওজন ছিল এক পাউন্ডের কম (৩৩৭ গ্রাম)। চিকিৎসকেরা ধরেই নিয়েছিলেন, তাকে বাঁচানো যাবে না। তাই শিশুটির মা–বাবাকে সেই ধরনের প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু শিশুটি বেঁচে গেছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্যমতে, বিশ্বের সবচেয়ে অপরিণত শিশু সে। সম্প্রতি তার প্রথম জন্মদিনও উদ্‌যাপন করা হয়েছে বেশ ঘটা করে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিচার্ড স্কট উইলিয়াম হাচিনসন মাত্র পাঁচ মাসেই জন্মগ্রহণ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিসের চিলড্রেনস মিনেসোটা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার জন্ম হয়। মা বেটা হাচিনসনের শারীরিক জটিলতার কারণে আগেভাগেই অস্ত্রোপচারকক্ষে যেতে হয়েছিল তাকে।

গিনেস রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ বলেছে, ১১ দশমিক ৯ আউন্স ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া রিচার্ড এতটাই ছোট ছিল যে তাকে হাতের তালুতেই রাখতে পারতেন মা–বাবা।

রিচার্ডের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন চিলড্রেনস মিনেসোটা হাসপাতালের নবজাতক বিশেষজ্ঞ স্টাসি কার্ন। তিনি বলেন, ‘রিচার্ডের জন্মের পর তার মা–বাবাকে বলা হয়েছিল, শিশুটি অনেক বেশি আগে পৃথিবীতে এসেছে। এ রকম শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা শূন্য শতাংশ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি রিচার্ডের মা–বাবাকে বলেছিলাম, শিশুটি বাঁচবে কি না, সেটা প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বোঝা যাবে। কারণ, এ সময়টা তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় পার করতে পারলে সে বেঁচে যেতে পারে।’

শিশুটির জন্য চিকিৎসকদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। দিনরাত শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাঁরা। করোনা মহামারির কারণে রিচার্ডের মা–বাবা রাতে তার কাছে থাকতে পারতেন না। পরিবারের অন্য সদস্যদের হাসপাতালে প্রবেশেরই অনুমতি ছিল না।

রিক হাচিনসন ও বেটা হাচিনসন থাকেন আরেক অঙ্গরাজ্য উইসকনসিনের সেন্ট ক্রক্স কাউন্টিতে। হাসপাতালে রাতে থাকতে না পারায় বেশ কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে আসতে হতো তাঁদের।

ছয় মাসের বেশি সময় হাসপাতালে কাটানোর পর গত ডিসেম্বরে রিচার্ড বাড়ি ফেরে। আর তার প্রথম জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয় ৫ জুন।