সৌদি আরব থেকে সামরিক সরঞ্জাম সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরব থেকে সামরিক সরঞ্জাম সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ছবি : রয়টার্স

উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক সামর্থ্য পুনর্গঠন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অঞ্চল থেকে কমপক্ষে তিনটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা (সিস্টেম) সরিয়ে ফেলেছে দেশটি।

মার্কিন কর্মকর্তারা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, সৌদি আরবের প্রিন্স সুলতান বিমানঘাঁটি থেকে কমপক্ষে একটি ক্ষেপণাস্ত্রপ্রতিরোধী সিস্টেম সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ইয়েমেন ও ইরাক থেকে বারবার রকেট ও ড্রোন হামলার শিকার হতে হচ্ছে সৌদি আরবকে।

এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি দেশটির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রপ্রতিরোধী সিস্টেম ছাড়াও বিমানবাহক ও নজরদারি সিস্টেমও মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এসব সরঞ্জাম তাদের অন্য জায়গায় দরকার হবে। তাই মধ্যপ্রাচ্য থেকে আরও সামরিক সরঞ্জাম প্রত্যাহারের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক সরঞ্জাম সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, তারা বিশ্বজুড়ে মার্কিন সম্পদ বরাদ্দের বিষয়টি মূল্যায়ন করে চলেছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার অর্থ হচ্ছে, সেখান থেকে কয়েক হাজার সৈন্যও প্রত্যাহার করা হবে। ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত ওই অঞ্চলে ৫০ হাজার মার্কিন সেনা ছিল। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার সময় ওই অঞ্চলে ৯০ হাজার সেনা উপস্থিত ছিলেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র কমান্ডার জেসিকা এল ম্যাকনালটি বলেন, ‘কোনো সুনির্দিষ্ট সক্ষমতার কথা না বলে আমরা বাহিনী বরাদ্দের ক্ষেত্রে কৌশলগত পন্থা অব্যাহত রাখি এবং নিয়মিতভাবেই বিভিন্ন কারণে তাতে সামঞ্জস্য আনা হয়।’

গত ফেব্রুয়ারি মাসেই পেন্টাগনের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে তাদের সেনাবাহিনীর সামরিক পদচিহ্ন, সম্পদ, কৌশল ও মিশনে অঙ্গবিন্যাস পর্যালোচনা করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠতা থাকলেও জো বাইডেনের পক্ষ থেকে রিয়াদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ‘ইয়েমেনসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সৌদি আরবের জন্য হুমকি রয়েছে বলে তারা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করতে চায়। বাইডেন প্রশাসন সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে রিয়াদের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের আগ্রহ রয়েছে।’

নেড প্রাইস আরও বলেছেন, ‘আমরা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষার জন্য সহযোগিতা করতে চাই। ইয়েমেন যুদ্ধের সমাপ্তিসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ নিতে চাই।’

গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইয়েমেনে যুদ্ধ থামাতে কাজ করছে। এ ছাড়া তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দোষী সাব্যস্ত করে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনও সামনে এনেছে বাইডেন প্রশাসন। এ ছাড়া কিছু সেনাও সরিয়ে নেওয়া হবে।