হাজার মাইল পাড়ি দিল ইগল

বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক ইগল স্টেলা।
ছবি: সংগৃহীত

পাখির শত শত মাইল পথ পাড়ি দেওয়ার কথা হয়তো অনেকেই শুনেছেন। কিন্তু এশিয়া অঞ্চল থেকে বিরল প্রজাতির কোনো শিকারি ইগলের হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা জানা গেল এবার।

সিএনএনের খবরে বলা হয়, পাখি পর্যবেক্ষকেরা বিরল স্টেলার সামুদ্রিক ইগল দেখার আশায় যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস স্টেট পার্কে ভিড় করছেন।

বড় ধরনের শিকারি এ পাখির বাস মূলত রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল ও এশিয়ার কিছু অংশে। ম্যাসাচুসেটস ডিভিশন অব ফিশারিজ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ তাদের এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, পাখিটি গত সপ্তাহে টাউনটন নদীর কাছে প্রথম দেখা যায়। পাখিটি আবাসস্থল থেকে হাজারো মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এখানে এসেছে। কিন্তু এখানে কীভাবে এসেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে বন্য প্রাণী কর্মকর্তারা বলেছেন, সম্ভবত ইগলটিকে এর আগে আলাস্কা ও কানাডায় দেখা গেছে।

ফেসবুক পোস্টে আরও বলা হয়, পাখিটি কেন পথ হারিয়েছে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। হয়তো শক্তিশালী ঝড়ের কারণে এটি পথ হারাতে পারে বা এর দিক নির্ণয়ে স্বাভাবিক ভুল হয়ে যেতে পারে। এটি পথ হারানো পাখি। এটি স্বাভাবিক আবাসস্থলে আবার ফিরতে পারবে কি না, কেউ জানে না।

স্টেলার সামুদ্রিক ইগল বিশ্বের অন্যতম বড় শিকারি পাখি। এর ওজন ২০ পাউন্ডের বেশি হতে পারে। এর পাখার দৈর্ঘ্য আট ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিরল পাখির আগমনের খবর দ্রুত পাখি পর্যবেক্ষক মহলে ছড়িয়ে পড়েছে। কর্নেল ইউনিভার্সিটিভিত্তিক ইবার্ড ডট ওআরজি সাইটে ৩০০টির বেশি ছবি পোস্ট করেছেন লোকজন।

ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা ক্যারল মোলান্ডার বলেন, পুরো নিউইংল্যান্ড থেকে ১০০–এর বেশি লোক এসেছেন পাখিটি দেখতে। এ নিয়ে সবাই রোমাঞ্চিত। যাঁরা বিরল পাখি আসার খবর জানেন না, তাঁদের কাছে খবর পৌঁছে দিতে উৎসুক তাঁরা। এ জন্য পাখিটির ছবি ছড়িয়ে পড়ছে।

ক্যারল মোলান্ডার আরও বলেন, ‘পাখিটির চঞ্চুটি উজ্জ্বল কমলা এবং এটি বিশাল। এটি বিরাট একটা পাখি। আমি ভেবেছিলাম, এটি জীবনে একবারের সুযোগ। আমি আর এ জীবনে এ পাখি দেখতে পাব না। ওই পাখির পাশে থাকা অন্য প্রজাতির কিছু ইগলকে এর চেয়ে অনেক ছোট মনে হয়।’

মোলান্ডার বলেছেন, অতীতে বেশ কয়েকটি বিরল পাখি দেখেছেন তিনি, কিন্তু এটি এখন পর্যন্ত তাঁর দেখা সবচেয়ে অসাধারণ বিরল পাখি।

স্টেলার সামুদ্রিক ইগলকে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারসের (আইসিইউএন) বিপদগ্রস্ত প্রজাতির লাল তালিকায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৪ হাজার ৬৭০টি স্টেলার সামুদ্রিক ইগল প্রাকৃতিক পরিবেশে টিকে আছে। পাখিটি তার আবাসস্থল থেকে অনেক দূরে থাকলেও আবহাওয়া তার জন্য অনুকূলেই রয়েছে।

ম্যাসাচুসেটস ডিভিশন অব ফিশারিজ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ বলেছে, পাখিটির আবাসস্থলের মতোই এখানকার আবহাওয়ার কারণে পাখিটির টিকে থাকা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।