২ হাজার ডলারের প্রণোদনা আইন পাসে চাপ ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মৃত্যুই যদি রিপাবলিকানদের শেষ ইচ্ছা না হয়, তাহলে যেন অবিলম্বে দুই হাজার ডলার নাগরিক প্রণোদনা আইন পাস করা হয়। আমেরিকার জনগণের জন্য ৬০০ ডলারের নগদ প্রণোদনা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ডেমোক্র্যাটদের যেন নির্বাচন চুরি করার সুযোগ দেওয়া না হয়। তিনি রিপাবলিকানদের কঠিন হতে আহ্বান জানিয়েছেন।


সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতা মিচ ম্যাককনেল স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার নাগরিক প্রণোদনা বৃদ্ধির আইনপ্রস্তাব উত্থাপনে বাধা দিয়েছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টি–নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে গত সোমবার আলাদা একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এই প্রস্তাবে নাগরিক প্রণোদনা ৬০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার ডলার করার কথা রয়েছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা চার্লস শ্যুমার বর্ধিত প্রণোদনার প্রস্তাবটি সিনেটে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সিনেটর মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, তাঁরা সিনেটে আরেকটি বিল নিয়ে আসবেন। ওই বিলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রযুক্তি কোম্পানিকে দেওয়া স্বাধীনতা কমাতে আগে থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছেন। ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঠিক আগে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে দেওয়া আইনের ২৩০ ধারা বাতিল করতে তিনি আইনপ্রণেতাদের চাপ দিচ্ছেন। এ নিয়ে সিনেটের পৃথক আইনপ্রস্তাব ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন পাবে বলে মনে হচ্ছে না।

গত রোববার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সই করা প্রণোদনা আইনে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ নগদ অর্থ প্রণোদনা পেতে শুরু করবেন। নতুন কোনো আইনপ্রস্তাব গৃহীত হলেও পাস হওয়া আইনে জনপ্রতি ৬০০ ডলার হিসেবে নাগরিক প্রণোদনা এ সপ্তাহেই পাঠানো শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।


ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণের কাছে শেষ মুহূর্তে নিজেকে ভালো দেখানোর জন্য প্রকাশ্যে এমন প্রস্তাব করায় রিপাবলিকান পার্টির রক্ষণশীলরা বিপাকে পড়েছেন। আসছে দু-এক দিনের মধ্যে এই বর্ধিত নাগরিক প্রণোদনার ভাগ্য নির্ধারিত হবে। ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং বর্ধিত নাগরিক প্রণোদনার প্রবর্তকেরা এই প্রস্তাব পাসের বিষয়ে বেশ আশাবাদী।


জর্জিয়ায় ৩ জানুয়ারি দুই সিনেট পদের নির্বাচন। এ দুই সিনেট পদে নির্বাচন করা রিপাবলিকান ডেভিড পেরুড এবং কেলি লয়েফলার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। বর্ধিত নাগরিক প্রণোদনার বিরোধিতা করলে ৩ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। ডেমোক্রেটিক পার্টি সিনেটের এ দুই আসন দখল করতে পারলে রিপাবলিকানদের ভরাডুবি হবে। হোয়াইট হাউস, কংগ্রেস ও সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের সম্ভাব্য সংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এর মধ্যেই রক্ষণশীলদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

ট্রাম্প রিপাবলিকানদের নিয়ে তেমন ভাবছেন না। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের চাপে ফেলে ৬ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার প্রকাশ্য তৎপরতা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। প্রতিদিন টুইট করে বলছেন, আরও বহুসংখ্যক জাল ভোট পাওয়া গেছে। তাঁর এ দাবি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আদালতে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

জর্জিয়ায় ৩ জানুয়ারি দুই সিনেট পদের নির্বাচন। এ দুই সিনেট পদে নির্বাচন করা রিপাবলিকান ডেভিড পেরুড এবং কেলি লয়েফলার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। বর্ধিত নাগরিক প্রণোদনার বিরোধিতা করলে ৩ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রভাব পড়বে।

৬ জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। পদাধিকারবলে কাজটি তিনি করবেন। ট্রাম্প–সমর্থক আইনপ্রণেতারা সেখানে ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে আপত্তি জানাবেন। দিনটিতে ট্রাম্পের সমর্থকেরা হোয়াইট হাউসের আশপাশে অবস্থানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির লোকজনও সমবেত হবেন। কোনো কোনো মহল থেকে ধারণা করা হচ্ছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটলে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মতো কোনো ঘটনাও ঘটতে পারে।


নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার দাবি থেকে সরে আসছেন না ট্রাম্প। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন। এ নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। ট্রাম্পও কিছু ঘটিয়ে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা মনে করেন, তিনিই পরের চার বছর ক্ষমতায় থাকছেন।