৩০ বছরে কমেছে ৪ লাখ কোটি ডলারের শস্য ও গবাদিপশুর উৎপাদন

সবজিখেতে জমেছে বৃষ্টির পানি। এতে সবজি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকেরা। গত ১০ আগস্ট বগুড়ার শিঙ্গা সেতু এলাকায়
ফাইল ছবি

প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে গত ৩০ বছরে ৩ লাখ ৮০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের শস্য ও গবাদিপশুর উৎপাদন কম হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

এফএওর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা, খরা, পোকামাকড়ের আক্রমণ, ঝড়, রোগবালাই ও যুদ্ধের কারণে ১৯৯১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের খাদ্য উৎপাদন কম হয়েছে। এটি মোট উৎপাদনের ৫ শতাংশ, যা দিয়ে প্রতিবছর ৫০ কোটি মানুষ খেতে পারত।

প্রতিবেদনটির মাধ্যমে এই প্রথম জাতিসংঘের সংস্থাটি প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে আর্থিক ক্ষতির দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।

এফএওর পরিসংখ্যান বিভাগের উপপ্রধান পিয়েরো কোনফোর্টি এএফপিকে বলেন, দুর্যোগ ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এটি সত্তরের দশক থেকে বেড়ে চার গুণ হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে ক্রমবর্ধমান প্রভাব ফেলছে এ দুর্যোগ। বিশ্বসম্প্রদায় এখন বিষয়টি আমলে নিচ্ছে।

‘কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তার ওপর দুর্যোগের প্রভাব’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে তীব্রতার পাশাপাশি দুর্যোগের বারবার আঘাত হানার হারও বাড়ছে। সত্তরের দশকে এ সংখ্যা প্রতিবছর ছিল ১০০, অথচ গত ২০ বছরে এ সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০০ হয়েছে।

এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষ ও গবাদিপশুর রোগ বাড়ছে। এফএও বলছে, বন্যা, পানির স্বল্পতা ও খরার কারণে কৃষির ফলন এবং মৎস্যসম্পদ হ্রাস, জীববৈচিত্র্য কমে যাওয়া এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো একাধিক ঝুঁকি ও হুমকিতে বিশ্বজুড়ে কৃষি খাতে ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিবছর ৬ কোটি ৯০ লাখ টন শস্য কম উৎপাদিত হচ্ছে, যা ফ্রান্সের বার্ষিক শস্য উৎপাদনের সমান। প্রায় ৪ কোটি টন ফল ও সবজি এবং ১ কোটি ৬০ লাখ টন মাংস, দুগ্ধ ও ডিম কম উৎপাদিত হচ্ছে।

দুর্যোগের কারণে মোট ক্ষতির প্রায় ২৩ শতাংশ হয়েছে কৃষি খাতে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল এশিয়া। কৃষি খাতে যে ক্ষতি হয়েছে, তার ৪৫ শতাংশই এ মহাদেশে। এখানে মোট কৃষি উৎপাদন ৪ শতাংশের মতো কম হয়েছে।