নিজের ‘শেষকৃত্য’ আয়োজন প্রেমিকার

সাজানো মৃত্যুশয্যায় শুয়ে আছেন তরুণী ওয়াং। পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর বন্ধুরা।ছবি: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনের এক অংশের স্ত্রিনশট

বিচ্ছেদ সব সময়ই কষ্টের, যন্ত্রণার। বিচ্ছেদের যন্ত্রণা ভোলার জন্য কত কিছুই না করতে দেখা যায় মানুষকে। তবে চীনের শিচুয়ান প্রদেশের এক তরুণী যা করেছেন, সেটাকে বিচিত্র ঘটনাই বলতে হবে।

চীনা ওই তরুণীর নাম ওয়াং (২৫)। একজনের সঙ্গে তাঁর তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাস ছয়েক আগে বিচ্ছেদ ঘটে প্রেমিকের সঙ্গে। এর পর থেকে একধরনের যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এ থেকে পরিত্রাণ খুঁজছিলেন ওয়াং।

ওয়াং জানান, বিচ্ছেদ হওয়ার পর গত ছয় মাসে একাধিক বিয়ের অনুষ্ঠানে গেছেন তিনি। যেখানেই গেছেন, বন্ধু আর স্বজনদের ছিল একই প্রশ্ন, ‘কবে বিয়ে করছ?’, ‘কবে তোমার বিয়েতে যেতে পারব?’ এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে ‘এক ঢিলে দুই পাখি মারার সিদ্ধান্ত’ নেন তিনি।

বিচ্ছেদের ব্যথা আর বন্ধু ও স্বজনদের প্রশ্ন থেকে বাঁচতে একটি পার্টির আয়োজন করেন ওয়াং। পার্টিতে ছিল বিশেষ চমক। তবে বন্ধুদের আমন্ত্রণ করার সময় বিষয়টি প্রকাশ করেননি তিনি। গত ২৮ অক্টোবর প্রাদেশিক রাজধানী চেংদুর সেই পার্টিতে এসেছিলেন ওয়াংয়ের কয়েক ডজন বন্ধু।

শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আদলে সেই আয়োজন করেছিলেন ওয়াং। পার্টিতে এসে তাঁর বন্ধুরাও চমকে যান। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, মৃত্যুশয্যায় শুয়ে আছেন ওয়াং। শয্যার চারপাশে জ্বলছে মোমবাতি। আর তাঁর বন্ধুরা একে একে ফুল দিয়ে তাঁকে ‘শেষ বিদায়’ জানাচ্ছেন।

ওয়াং বলেন, পার্টি চলাকালে ‘নতুন জীবনে’ ফেরেন তিনি। এরপর জীবন ও মৃত্যু নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মাতেন। ওয়াং জানান, পরিবারের আপত্তিতে প্রেমিককে বিয়ে করতে না পেরে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন। তবে এ কষ্ট সইতে পারছিলেন না। সেই কষ্ট লাঘবের জন্য এভাবে ‘শেষকৃত্যানুষ্ঠান’ করেন তিনি। এমন আয়োজন করে অনুতপ্ত নন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন নতুন করে আবার জীবন শুরু করবেন।

ওয়াংয়ের এমন অদ্ভুত আয়োজন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন। দোইন নামের একজন বলেন, এমন আয়োজন দেখে তিনি ভয় পেয়েছিলেন। তবে কষ্ট লাঘবে ওয়াংয়ের অভিনব এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনেকেই।