আন্তর্জাতিক তহবিল কমায় চলতি বছর শিশুমৃত্যু বাড়তে পারে ২ লাখের বেশি: গেটস ফাউন্ডেশন

গত বছর সারা বিশ্বে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৪৬ লাখফাইল ছবি: রয়টার্স

স্বাস্থ্য খাতে আন্তর্জাতিক তহবিল কাটছাঁটের জেরে চলতি বছর বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু বাড়তে পারে। ২০২৪ সালের তুলনায় তা হতে পারে ২ লাখের বেশি। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দাতব্য সংস্থা গেটস ফাউন্ডেশন।

গেটস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সাল থেকে শিশুমৃত্যু প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত বছর সারা বিশ্বে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৪৬ লাখ। চলতি বছর তা বেড়ে ৪৮ লাখ হতে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী মৃত্যুর পরিমাণ যদি এভাবে বেড়ে চলে, তাহলে তা হবে চলতি শতকে প্রথমবারের মতো প্রতিরোধযোগ্য শিশুমৃত্যুর হার বৃদ্ধির ঘটনা।

বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাতে দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা করা গেটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ধনকুবের বিল গেটস। তিনি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে শিশুদের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে অগ্রগতি করেছে বিশ্ব। তবে বর্তমানে চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেছে। এই অগ্রগতি এখন উল্টো দিকে যাচ্ছে।’

গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনটিতে দারিদ্র্য কমানো ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অগ্রগতি অনুসরণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা সাধারণত প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশ করা হয়। তবে এ বছর বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য খাতে তহবিল সরবরাহের অনিশ্চয়তা ঘিরে তা প্রকাশে বিলম্ব হয়েছে।

এই অনিশ্চয়তার শুরু হয় চলতি বছরের শুরু থেকে। তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেওয়া আন্তর্জাতিক তহবিলে কাটছাঁট করেছিল। পরে যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মতো অন্যান্য বড় দাতা দেশও একই পথে হেঁটেছে। গেটস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে ২০২৪ সালের তুলনায় চলতি বছর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন সহায়তা প্রায় ২৭ শতাংশ কমে গেছে।

দাতব্য সংস্থাটি বলছে, শিশুমৃত্যু বৃদ্ধির পেছনে তহবিল কমা মূল কারণ হলেও আরও কিছু বিষয় রয়েছে। যেমন বিভিন্ন দেশ বিপুল পরিমাণ দেনায় ডুবে রয়েছে। ফলে তারা স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারছে না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা নড়বড়ে হয়েছে পড়ছে। এই তহবিল কাটছাঁট যদি স্থায়ী হয়, তাহলে ২০৪৫ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ২০ লাখ থেকে ১ কোটি ৬০ লাখ শিশুর মৃত্যু হতে পারে।