অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

জাপানের একটি বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি। ছবি: এএফপি
জাপানের একটি বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি। ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এটাই নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী বলে আজ শনিবার নিশ্চিত করেছে দেশটি। ভাইরাসটির উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশে নিজ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া। এদিকে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

আজ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়ায় শনাক্ত হওয়া রোগী ৫০ বছর বয়সী একজন চীনা নাগরিক। তিনি উহান শহরে ছিলেন, যেখানে ভাইরাসটি প্রথম দেখা দেয়। গত ১৯ জানুয়ারি তিনি চীনের গুয়াংজু থেকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে আসেন। তিনি এখন মেলবোর্নের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।

ভিক্টোরিয়া রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনি মিকাকস সাংবাদিকদের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সতর্কতা জারি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

ভিক্টোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অ্যাঞ্জি বোন বলেছেন, রোগী নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে নেই। তাঁর অবস্থা অতটা গুরুতর নয়, স্থিতিশীল।

করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এ পর্যন্ত ৪১ জনে পৌঁছেছে। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৩০০-র বেশি। আক্রান্ত ও মৃত লোকজনের বেশির ভাগই উহান শহরের। ওই শহরে চীনা কর্তৃপক্ষ ভ্রমণ এবং একসঙ্গে অনেক লোকের সমাগত হওয়ার ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

ভাইরাসটি সতর্ক হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এটিকে ঘিরে অনেক তথ্যই অজানা রয়ে গেছে। যেমন এটি কতটা বিপজ্জনক এবং এটা কতটা সহজে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নিউমোনিয়া দেখা দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্থান দিতে দ্রুত হাসপাতাল নির্মাণ করছে চীন। ছবি: এএফপি
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্থান দিতে দ্রুত হাসপাতাল নির্মাণ করছে চীন। ছবি: এএফপি

আজ হুবেই প্রদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হুবেই প্রদেশের উহান এবং আরও কয়েকটি শহরে ভ্রমণে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যদি কেউ হুবেই প্রদেশে এখন ভ্রমণে যান, তবে নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত তাঁকে সে স্থান ছেড়ে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না।

চীনের নাগরিকদের ভ্রমণের জন্য অস্ট্রেলিয়া জনপ্রিয় একটি স্থান। গত বছর চীন থেকে স্বল্প সময়ের ভ্রমণে অস্ট্রেলিয়া গেছেন ১৪ লাখ মানুষ। অস্ট্রেলিয়ার বিদেশি দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বড় উৎস চীন।

চীনে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
আজ শনিবার বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ১৫ জন মারা গেছেন। দেশটিতে ১ হাজার ২৮৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪১ জন।

চীনের নতুন বর্ষ উদ্‌যাপনের সময় এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিল। চীনের নববর্ষ দেশটির সবচেয়ে বড় উৎসবের একটি। নববর্ষ উপলক্ষে গৃহীত অনেক অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।

উহান শহরে নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, এক হাজার শয্যার হাসপাতালটি ছয় দিনের মধ্যে প্রস্তুত হতে পারে। ৩৫টি খননযন্ত্র ও ১০টি বুলডোজার কাজ করছে সেখানে।