অস্ট্রেলিয়ায় লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে বাড়তে পারে করোনা সংক্রমণ

অস্ট্রেলিয়ায় জারি করা কঠোর লকডাউন তুলে নেওয়ার দাবিতে কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়।ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিসহ কয়েকটি শহরে লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যেই আজ রোববার বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখেছে দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশ। অস্ট্রেলিয়ায় করোনার ডেলটা ধরন ছড়িয়ে পড়ার পর আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মহামারি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, কঠোর লকডাউন তুলে নেওয়ার দাবিতে গতকাল শনিবার দেশটির সিডনি শহরে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার মানুষ। মেলবোর্ন ও ব্রিসবেন শহরেও হয়েছে বিক্ষোভ। এ সময় প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। এগুলোর মধ্যে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘মাস্ক খুলুন, আপনার আওয়াজ তুলে ধরুন।’ আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘জেগে ওঠো অস্ট্রেলিয়া’। সেখান থেকে ৫৭ জনকে আটক করা হয়।

শনিবারের বিক্ষোভের ঘটনাকে ‘হৃদয় ভেঙে দেওয়ার মতো’ বলে উল্লেখ করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস প্রদেশের প্রিমিয়ার গ্লাডিস বেরেজিকলিয়া। এর ফলে প্রদেশে করোনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বেরেজিকলিয়া বলেন, ‘আমি আশা করছি অবস্থার অবনতি হবে না। তবে তা হতেও পারে।’

নিউ সাউথ ওয়েলসে রোববার ১৪১ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি মিলেছে। এর আগের দিনই ১৬৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। প্রদেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮১ জন। তাঁদের মধ্যে ৪৩ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি। গতকাল এই সংখ্যা ছিল ৩৭।

নিউ সাউথ ওয়েলসে সংক্রমণ বাড়ার জন্য টিকাদানের ধীরগতিকে দুষছেন প্রিমিয়ার গ্লাডিস বেরেজিকলিয়াসহ অন্যরা। তবে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের দাবি, ঠিকঠাকভাবে লকডাউন বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিউ সাউথ ওয়েলসে করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। টিকা দিলেই লকডাউনের মেয়াদ কমে আসবে না। এদিকে সমালোচকেরা অভিযোগ এনেছেন, প্রদেশটির লকডাউন কঠোরভাবে পালন করা হচ্ছে না। এ কারণে অন্য অঞ্চলগুলোতেও করোনা বেড়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় করোনা শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে ৯১৮ জনের। দেশটিতে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হচ্ছে মূলত টিকাদানের ঘাটতিকে। দেশটিতে করোনার টিকা পেয়েছেন ১৪ শতাংশের কম মানুষ। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।