জঙ্গি সংগঠন আইএসের সঙ্গে অনলাইন দ্বৈরথ
প্যারিসে জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে অনলাইনে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে কার্যক্রম জোরদার করেছে উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে তৎপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে রয়েছে মুঠোফোনে বার্তা আদান-প্রদানের সেবাদাতা ‘টেলিগ্রাম’ ও হ্যাকারদের সংগঠন অ্যানোনিমাস।
‘টেলিগ্রাম’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইএসের ব্যবহার করা সম্প্রচার চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দিতে কাজ করছে তারা। প্যারিসে গত শুক্রবারের হামলার পর এ পর্যন্ত আইএসের ৭৮টি চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছে।
লোকজনকে দলে টানতে নিরাপদে বার্তা আদান-প্রদানের জন্য টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে আসছে আইএস। সংগঠনটি প্যারিসে হামলার দায়ও স্বীকার করে ওই অ্যাপটির মাধ্যমে। অ্যাপটি চালু করা হয় দুই বছর আগে। রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিকনতাকতের প্রতিষ্ঠাতা এবং দেশটি থেকে নির্বাসিত দুই ভাই এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ভিডিও, টেক্সট এবং ভয়েস বার্তা দ্রুত ও নিরাপদে আপলোড করার ব্যবস্থা থাকায় দ্রুত এটি জনপ্রিয়তা পায়।
দুই মাস আগে টেলিগ্রাম তার ব্যবহারকারীদের জন্য সম্প্রচারের সুবিধাযুক্ত একটি কৌশল চালু করে। নিরাপত্তা গবেষকদের মতে, সামরিক বিজয় বা নিজেদের মতবাদ-সম্পর্কিত ভিডিও সম্প্রচার ও ‘শেয়ার’ করার জন্য আইএসের কাছে ওই কৌশলটি প্রিয় হয়ে ওঠে। গত বুধবার টেলিগ্রাম এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের সাইটে ১২টি ভাষায় আইএস-সম্পর্কিত ৭৮টি সম্প্রচার চ্যানেল চিহ্নিত করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এটা জেনে বিব্রত যে আইএস তাদের প্রচারণা চালানোর জন্য আমাদের পাবলিক চ্যানেলগুলো ব্যবহার করছে।’
অ্যানোনিমাসের দিকনির্দেশনা: হ্যাকারদের সংগঠন অ্যানোনিমাস আইএস-সংশ্লিষ্ট উগ্রবাদীদের চিহ্নিত করতে একটি দিকনির্দেশনা প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, তারা অনলাইনে কয়েক হাজার উগ্রবাদীর সন্ধান পেয়েছে। প্যারিসে হামলার পর আইএসের বিরুদ্ধে অনলাইনে জোরেশোরে অভিযান শুরু করে অ্যানোনিমাস। একটি অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার পর নতুন আরেকটি খোলা তুলনামূলক সহজ হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একের পর এক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে থাকলে প্রচারণা বাধাগ্রস্ত হবে। অ্যানোনিমাস ওয়েবসাইট স্টার্টআপ ‘ক্লাউডফ্লেয়ারের’ বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে তারা আইএসপন্থী ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে সাইবার হামলা ঠেকাতে সাহায্য করছে।
প্যারিসে হামলার আগের সপ্তাহে অ্যানোনিমাসের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবিরোধী গ্রুপ ‘গোস্ট সিকিউরিটি’ জানায়, এমন প্রায় ৪০টি ওয়েবসাইট পাওয়া গেছে, যারা নিজেদের কনটেন্ট রক্ষায় ‘ক্লাউডফ্লেয়ারের’ সেবা নেয়। ‘গোস্টসেক’-এর বক্তব্য, এর মধ্যে ৩৪টি প্রচারণামূলক, চারটি আলোচনা ফোরাম ও দুটি কারিগরি সেবা দেয়।