আট হাজার কিমি ভেসে হাওয়াই থেকে ফিলিপাইন

হারানো সার্ফবোর্ডের সঙ্গে ছবি তোলেন ব্রানজুয়েলাসহ অন্যরা
ছবি: এএফপি

ডগ ফ্যাল্টার (৩৫) যুক্তরাষ্ট্রের একজন সার্ফার ও আলোকচিত্রী। হাওয়াইয়ে সার্ফিং করার সময় বিশাল ঢেউয়ে হারিয়ে ফেলেছিলেন তাঁর শখের সার্ফবোর্ডটি। সেই সার্ফবোর্ড আট হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে পাওয়া যাবে, তা তিনি কখনো কল্পনাও করতে পারেননি। খবর এএফপি।

হাওয়াইয়ের ওয়াইমিয়া বেতে সার্ফিংয়ের সময় ফ্যাল্টারের ফ্যাকাশে নীল রঙের সার্ফবোর্ডটি হারিয়ে যায়। হারানোর দুই বছর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, বোর্ডটি ফিলিপাইনের সরঙ্গনি প্রদেশের একটি দূরবর্তী দ্বীপে পাওয়া গেছে। স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উদীয়মান সার্ফার জিওভানে ব্রানজুয়েলা (৩৮) প্রতিবেশীর কাছ থেকে ২ হাজার পেসো (৪০ ডলার) দিয়ে বোর্ডটি কিনেছিলেন। ব্রানজুয়েলা বলেন, ২০১৮ সালের আগস্টে জেলেরা সাগরে ভাসমান অবস্থায় সার্ফবোর্ডটি পান। এর ছয় মাস আগে ফ্যাল্টার সেটি হারিয়ে ফেলেন। জেলেরা ভেবেছিলেন, সাগরে কোনো ইয়ট থেকে হয়তো এটি পড়ে গেছে। তাঁরা প্রথমে ব্রানজুয়েলার এক প্রতিবেশীর কাছে মাত্র কয়েক ডলারে সার্ফবোর্ডটি বিক্রি করেন। পরে ব্রানজুয়েলা সেটি কিনে নেন।

সার্ফবোর্ডটি তৈরি করেছিলেন হাওয়াইভিত্তিক নির্মাতা লাইল কার্লসন। কৌতুহলবশত ব্রানজুয়েলা ফেসবুকে কার্লসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সার্ফবোর্ডের একটি ছবি তুলে পাঠান। কার্লসন এরপর ছবি ও ভিডিও শেয়ারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ছবিটি শেয়ার করেন এবং ফ্যাল্টারকে ট্যাগ করেন। তখন ফ্যাল্টার নিশ্চিত হন, এই সার্ফবোর্ডটিই তিনি দুই বছরের আগে ঢেউয়ের তোড়ে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

টেলিফোনে ব্রানজুয়েলা বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে ভেসে ভেসে এখানে আসতে পারে, তা প্রথমে আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না।’

কার্লোস ও ব্রানজুয়েলার মধ্যে ফেসবুকে কথাবার্তা চলতে থাকে। একপর্যায়ে ফ্যাল্টার (৩৫) সার্ফবোর্ডটি সংগ্রহ করতে ফিলিপাইনের ওই ছোট্ট দ্বীপে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সার্ফবোর্ডটির সঙ্গে তাঁর অনেক আবেগ আর স্মৃতি মিশে আছে। তাই তিনি সেটা পেতে উদ্গ্রীব ছিলেন। কিন্তু বাদ সাধে করোনাভাইরাস মহামারি। তবে এই মহামারির কারণে জারি করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর তিনি ঠিকই ছুটে যান ফিলিপাইনের সেই দ্বীপে। আলোকচিত্রী ফ্যাল্টার বলেন, এই বোর্ডটি তাঁর কাছে অনেক কিছু। কারণ, এটি দিয়েই তিনি সার্ফিংয়ে দক্ষতা অর্জন করেন। ১৫ বছর আগে ফ্লোরিডা থেকে বোর্ডটি কিনেছিলেন। পরে তিনি হাওয়াইয়ে চলে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন সার্ফবোর্ডটির ছবি দেখি, তখন আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে এটা আমার হারিয়ে যাওয়া বোর্ড। আমি কখনো ভাবিনি, বোর্ডটি আবার ফিরে পাব।’

আর ব্রানজুয়েলা বলেছেন, বোর্ডটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে তিনি ভীষণ খুশি।