ইইউর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে শেষ প্রচেষ্টা যুক্তরাজ্যের

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন
ছবি রয়টার্স

চলতি বছরের শেষ দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার মুখে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিটি বহাল রাখার প্রচেষ্টা চলছে। এ জোটের সঙ্গে চুক্তিটি বহাল রাখার শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে গত বুধবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইইউ সদর দপ্তরে ইইউ কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে তিন ঘণ্টার হৃদ্যতাপূর্ণ আলোচনা হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে তাঁরা উভয়ই আগামী রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সর্বশেষ আলোচনায় আগের মতপার্থক্যগুলো আবার সামনে এসেছে। যুক্তরাজ্য ইইউ জোটে না থাকলেও জোটের শুল্কমুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থায় থাকতে আগ্রহী। বাণিজ্য চুক্তির মতপার্থক্যের বিষয়গুলো নিয়ে এখন উভয় পক্ষ রোববার পর্যন্ত সময় পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রাসেলস সফরের আগে হাউস অব কমন্সে বলেছিলেন, ইইউ জোটের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি টিকিয়ে রাখতে ইইউ জোটের শর্তগুলো মেনে নেওয়া যুক্তরাজ্যের কোনো প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই সম্ভব নয়। এটি তাঁর দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করলেও ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সময়সীমা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষে বোঝাপড়া না হলে চুক্তিহীন বিচ্ছেদপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। যদি রোববারের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে অগ্রগতি হয়, পরে তা ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইইউ মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিত হতে হবে। অন্যদিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকেও চুক্তিটির অনুমোদন পেতে হবে।

ব্রাসেলসে ব্রিটিশ সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত বাণিজ্য চুক্তি হবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী জনসন সম্ভাব্য কোনো চুক্তি নিয়ে শেষ চেষ্টা চালাতে চান। ইইউ কমিশনের সভাপতি উরসুলা বলেছেন, তাঁদের মধ্যে খুব আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। তবে চুক্তিটির কাছাকাছি আসার পথ এখনো অনেক দূরে।

প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রাসেলস সফরের আগে হাউস অব কমন্সে বলেছিলেন, ইইউ জোটের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি টিকিয়ে রাখতে ইইউ জোটের শর্তগুলো মেনে নেওয়া যুক্তরাজ্যের কোনো প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই সম্ভব নয়। এটি তাঁর দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে বর্তমান মেয়াদে ইইউর সভাপতি জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জোর দিয়ে বলেছেন, ইইউ তার মূল নীতিগুলোর সঙ্গে কোনো আপস করবে না। ব্রিটিশ পক্ষ যদি ইইউ জোটের শর্তগুলো না মানতে পারে, তবে চুক্তি ছাড়াই একটি পথ নেওয়া হবে। তা ছাড়া জোটভুক্ত ২৭ দেশের ৪৫ কোটি মানুষের বাজার পেতে যুক্তরাজ্যকে ইইউ জোটের মানদণ্ড মানতে হবে। আর চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের জন্য ইইউ দেশগুলো প্রস্তুত রয়েছে, তবে তা ভালো দৃষ্টান্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।