ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন হলে ঠেকাবেন বাইডেন

জো বাইডেন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন ঠেকানোর অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন রাশিয়ার জন্য ‘খুব, খুব কঠিন’ করে তুলবেন তিনি। গত শুক্রবার এ হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খবর এএফপির

ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে সীমান্ত এলাকায় রাশিয়া বিপুলসংখ্যক সেনা সমাবেশ ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে কিয়েভ। ওয়াশিংটনও একই কথা বলছে। এ পটভূমিতে জো বাইডেন শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ব্যাপক মাত্রায় ও অর্থবহভাবে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য পরিস্থিতি খুব কঠিন করে তুলবেন।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে ভিডিও সংলাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ওয়াশিংটন ও মস্কো—দুই পক্ষ থেকেই বিষয়টি শুক্রবার নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাইডেনের এ সতর্কবার্তার এক দিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি করে বলেছিলেন, ইউক্রেনে হামলা চালালে দুর্ভোগ পোহাতে হবে মস্কোকে। গত বৃহস্পতিবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে ব্লিঙ্কেন এ সতর্কবার্তা দেন। ব্লিঙ্কেন বলেন, ইউক্রেন আক্রমণ করলে গুরুতর পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে রাশিয়াকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে সীমান্ত এলাকায় সেনাসমাবেশ ঘটাচ্ছে রাশিয়া। সম্ভাব্য সব উপায়ে আগামী বছরের শুরুতে এ হামলা চালাতে পৌনে দুই লাখ পর্যন্ত সেনা প্রস্তুত করছে মস্কো। আর ইউক্রেন বলেছে, আগামী মাসেই বড় আকারের হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।

বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘কামান ও যুদ্ধসরঞ্জামসহ আনুমানিক ১০০ ব্যাটালিয়ন যুদ্ধসেনার সমাবেশ ঘটনা হচ্ছে।’ তাঁর দাবি, এ সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার হতে পারে। তবে গোয়েন্দা তথ্যের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। তবে তারা বলেছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা করেছে, এমন তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের।

এদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে বলেন, ‘আসছে জানুয়ারির শেষ দিকে সম্ভাব্য উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’ ইউক্রেন সীমান্তের কাছে এরই মধ্যে প্রায় এক লাখ সেনার সমাবেশ ঘটানো হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে সীমান্তে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সামরিক অভিযান চালিয়ে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। দেশটি ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরও মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে।