এশিয়ার মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করবেন বাইডেন

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নেতাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আলাপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে এশীয় মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের ক্ষয়ে যাওয়া সম্পর্কের মেরামত ও প্রতিরক্ষা চুক্তিগুলো সচল করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ইউরোপের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথাবার্তা বলার এক দিন পর বাইডেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন, অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদা সুগার সঙ্গে এ ফোনালাপ করেন। ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় এই তিন নেতাই এরই মধ্যে বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যদিও ট্রাম্প নির্বাচনে পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

জাপানি কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপে প্রধানমন্ত্রী সুগা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর হওয়ার ব্যাপারে জোরালোভাবে সতর্ক করেন। এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর এই সোজাসাপ্টা বক্তব্যের জবাবে বাইডেন জাপানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে ও কয়েক দশকের পুরোনো ওয়াশিংটন-টোকিও চুক্তিগুলো মেনে চলা নিয়ে নিজের গভীর প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন বলে জানায় তাঁর ট্রানজিশন টিম।

পৃথক আলাপে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই করোনা মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং দেশগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক মিত্ররা ট্রাম্পের চার বছরের শাসনকালে অনেক সময় তাদের স্বার্থ রক্ষায় তাঁর দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট মুনের সঙ্গে ১৪ মিনিটের পৃথক ফোনালাপে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া জোটকে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির অপরিহার্য অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বলে জানা গেছে। উত্তর কোরিয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ারও অঙ্গীকার করেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন সময় জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার ভাবনা খোলাখুলি ব্যক্ত করেছেন। উত্তর কোরিয়ার যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ ঠেকাতে দেশ দুটিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে।

দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ব্লু হাউস জানায়, মুন ও বাইডেন দুজনই নবনির্বাচিত এই প্রেসিডেন্টের অভিষেকের পর যত দ্রুত সম্ভব সাক্ষাৎ করতে সম্মত হয়েছেন।

অন্যদিকে বাইডেনের সঙ্গে আলাপকালে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী মরিসন তাঁকে দেশটিতে সফরের আমন্ত্রণ জানান। বাইডেন এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তা চুক্তির ৭০তম বার্ষিকীতে দেশটিতে সফরে যাওয়ার কথা জানান। এ সময় বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অস্ট্রেলিয়ার জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্যারিস চুক্তির অংশীদার হওয়ার পরও দেশটির রক্ষণশীল সরকার এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ধীরগতির পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাঁর আহ্বানকে খুব উষ্ণ (আন্তরিক) আখ্যা দিয়ে মরিসন বলেন, বাইডেন শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রার কথা তোলেননি, বরং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছেন।

পৃথক আলাপে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই করোনা মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা এবং দেশগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে পদক্ষেপ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেন।