করোনা থেকে মুক্তির সহজ কোনো পথ নেই: ডব্লিউএইচও

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। ছবি: এএফপি
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। ছবি: এএফপি

বিশ্বজুড়ে ছড়াতে থাকা করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির কোনো সহজ পথ নেই বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সঙ্গে সংস্থাটি বলেছে, এই মহামারি থেকে বাঁচতে হলে আমাদের লড়াই করতে হবে, একতাবদ্ধ থাকতে হবে ও আরও সক্রিয় হতে হবে।

করোনা সংক্রমণে সৃষ্ট কোভিড–১৯ রোগ নিয়ে গত শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।

ব্রিফিংয়ে ডব্লিউএইচও প্রধান করোনা মোকাবিলায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেন। লড়াই, একতা ও সক্রিয়তা বজায় রাখার পাশাপাশি আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থাকার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘আমরা এ মুহূর্তে এই লড়াই সবে শুরু করেছি।’ করোনার টিকা পেতে এখনো ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে জানিয়ে আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আমরা এ–ও স্বীকার করছি, এই সময়ের মধ্যে করোনায় আক্রান্তদের জন্য ও মানুষের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন।’

আশার কথা, নরওয়ে ও স্পেনেও প্রথমবারের মতো সংক্রমিত ব্যক্তির ওপর এই রোগের ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হতে চলেছে। এর মধ্য দিয়ে কোভিড–১৯–এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চারটি ভিন্ন ওষুধ বা ওষুধের সম্মিলিত প্রয়োগ কতটা নিরাপদ ও কার্যকর, তার তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যাবে। এটি এক ঐতিহাসিক পরীক্ষা, যা করোনায় কোন ওষুধ কাজ করে, সে বিষয়ে জোরালো প্রমাণ পাওয়ার সময়ও নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনবে—জানান গেব্রেয়াসুস।

ডব্লিউএইচওর প্রধান আরও বলেন, এই পরীক্ষায় ৪৫টির বেশি দেশ অবদান রাখছে ও আরও দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যত দেশ এতে যোগ দেবে, তত দ্রুত ফলাফল পাওয়া যাবে। এর আগ পর্যন্ত কোভিড–১৯ থেকে আরোগ্য পেতে তিনি ব্যক্তি ও জাতীয় পর্যায়ে এমন কোনো চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ না করার অনুরোধ জানান, যা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়নি। তিনি বলেন, চিকিৎসাবিদ্যায় এমন ইতিহাস আছে, যেখানে কোনো ওষুধের কার্যকারিতা বিষয়ে হয়তো কাগজে-কলমে বা টেস্টটিউবে প্রমাণ মিলেছে, কিন্তু মানবশরীরে তা কাজ করেনি বা ক্ষতি করেছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে একটি ব্রিফিং করার কথা উল্লেখ করে ডব্লিউএইচওর প্রধান বলেন, সেখানে তাঁরা নিজ নিজ দেশের করোনা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা ও তা থেকে শিক্ষণীয় বিষয় বিনিময় করেছেন। ব্রিফিংয়ে কিছু অভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে, যা হলো:

• করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে আগেভাগেই শনাক্ত ও বিচ্ছিন্ন (আইসোলেশন) করা,

• আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত ও ফলোআপ করা এবং কোয়ারেন্টিনে রাখা,

• চিকিৎসাসেবা সর্বোচ্চ করা,

• করোনা মোকাবিলার লড়াইয়ে কমিউনিটিকে যুক্ত করা ও আস্থা গড়ে তোলা।