করোনায় মানুষ গড়া বন্ধ, তাই স্কুল গড়ার কাজে

ইসরায়েল–অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি গ্রাম। সেখানে একটি স্কুলের সামনে স্তূপ করে রাখা নির্মাণসামগ্রী। সামনে দাঁড়িয়ে ওই স্কুলেরই শিক্ষক ইব্রাহিম আল-বারগাউতি। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলের পড়াশোনা বন্ধ। এতে ছেদ পড়েছে মানুষ গড়ার কাজে। তাই সহকর্মীদের নিয়ে অন্য রকম কাজে ব্যস্ত তিনি। ইট-বালু-সিমেন্ট দিয়ে স্কুলের নতুন অংশ গড়ছেন।

করোনা পরিস্থিতিতে অনেক দিন স্কুল বন্ধ। রামাল্লার উত্তর-পশ্চিমে দির আবু মিশাল গ্রামের হাসান আলান স্কুলের অধ্যক্ষ ইব্রাহিম। স্কুলটির সংস্কারের কথা অনেক দিন ধরেই ভাবছিলেন তিনি। ভাবছিলেন আরও তিনটি ক্লাস যোগ করার কথা।

করোনার সংক্রমণ রোধে দুই মাস আগে স্কুল বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। এই খারাপ সময়টাকেই ভালোভাবে কাজে লাগাতে চেয়েছেন ইব্রাহিম। স্কুলে শিক্ষক ও কর্মী মিলিয়ে আছেন ২৪ জন। এএফপিকে তিনি জানান, স্কুলের নির্মাণকাজে অংশ নিতে তাঁরা রঙের ব্রাশ ও বেলচা নিয়ে কাজ করবেন কি না, জানতে চান। তাঁরা সবাই হাসিমুখে তাঁকে সহায়তা করতে রাজি হন।

ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা নিজ হাতে স্কুল পুনর্নির্মাণের কাজ করছি। গ্রামবাসী আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছে, এ জন্য তাঁদের ধন্যবাদ।’

স্কুলের কয়েকজন কর্মীর আগে থেকেই নির্মাণকাজের অভিজ্ঞতা ছিল। তাঁরা অন্যদের শেখান—কীভাবে বিমগুলো এক করে কাজ করতে হয়। কীভাবে টাইলস বসাতে হয়।

করোনা থেকে রেহাই পেতে সবাই সার্জিক্যাল মাস্ক পরেছিলেন।

জীববিজ্ঞানের শিক্ষক মোহাম্মদ ওসমান টাইলস বসানোর কাজে ব্যস্ত। বললেন, স্কুলের সংস্কার কাজের জন্য প্রশাসন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু সীমিত সম্পদের কারণে বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।

করোনায় অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দির আবু মিশাল স্কুলের বেশির ভাগ শিক্ষককে মে মাস থেকে অর্ধেক বেতন দেওয়া হয়েছে।

স্কুলের সেক্রেটারি ইউসুফ সালমান বলেন, গ্রামের বাসিন্দাদের নৈতিক সমর্থন যথেষ্ট। শিক্ষক ধামির হামদানও এতে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে হয়তো বেতন ছাড়া কাজ করার কারণ জানতে চাইবেন। কিন্তু আমরা গ্রামের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।’