করোনায় সাংবাদিকদের কাজে পদে পদে বাধা

করোনাকালে নানাভাবে তথ্যের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে
প্রতীকী ছবি

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি সাংবাদিকদের পেশাগত কাজ জটিল করে তুলেছে। আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারিকালে সৃষ্ট নতুন সব সীমাবদ্ধতার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার, নির্বাচিত প্রতিনিধি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ফেডারেশন। কিন্তু তারা সাংবাদিকদের প্রবেশগম্যতা বাধাগ্রস্ত করতে প্রায়ই চলমান এই স্বাস্থ্য সংকটকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষজ্ঞরা এমন মত দিয়েছেন।

এখন অধিকাংশ সংবাদ সম্মেলন ভার্চ্যুয়ালি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের আগেই প্রশ্ন জমা দিতে হচ্ছে। কখনো কখনো প্রশ্ন করার সুযোগও থাকছে না।

সাংবাদিকদের অনেক বিষয় জানার থাকলেও তাঁরা উত্তর পান না। সব মিলিয়ে করোনাকালে নানাভাবে তথ্যের প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে।

করোনাকালে খেলা, ফ্যাশন উইকসহ বিভিন্ন আয়োজনে সাংবাদিকদের জন্য ব্যবস্থা সীমিত রাখা হয়েছে, যেখানে তাঁদের পক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে তাঁদের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত তথ্য পাওয়া সম্ভব হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার অধ্যাপক ডেভিড কুইলিয়ার বলেন, ‘আমরা এমন সব পরিস্থিতি দেখছি, যেখানে লোকজন তথ্য গোপনে কোভিডকে ব্যবহার করছেন।’

করোনাসংক্রান্ত তথ্য গোপনেরও প্রচেষ্টা বিভিন্ন দেশে লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ, করোনা ব্যবস্থাপনার প্রকৃত তথ্য সামনে এলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বা স্থানীয় সরকারের জন্য তা অস্বস্তিকর হতে পারে।

সাংবাদিকদের করোনাসংক্রান্ত তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানানোর অনেক নজির বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস অঙ্গরাজ্যে চলতি সপ্তাহেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে।

অধ্যাপক ডেভিড কুইলিয়ার বলেন, করোনাকালে সরকারি সংস্থা, সিটি কাউন্সিল বা স্থানীয় সংগঠন গোপনে নানান সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এসব সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জনগণ জানতে পারছে না।

রাজনীতিবিদেরাও নিজেদের সুবিধা হাসিলের লক্ষ্যে করোনাকে ব্যবহার করছেন। তাঁরা করোনার অজুহাত দেখিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার দিকটি এড়িয়ে যাচ্ছেন।
করোনা-সংশ্লিষ্ট ‘গুজব’ ঠেকানোর নামে অনেক দেশের কর্তৃপক্ষ এমন সব ব্যবস্থা নিয়েছে যে সাংবাদিকেরা সেন্সরশিপে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

করোনাকালে চীন ও মিসরের মতো দেশ বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা বাতিল বা দেশত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে।

করোনায় গণমাধ্যমের আয় মারাত্মকভাবে কমে গেছে। তার ওপর এখন তাদের এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।