কিউবায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মামলা

খাবার ও জ্বালানির মতো নিত্যপণ্যের ঘাটতি, নাগরিক অধিকার খর্ব হওয়া এবং মহামারির লাগাম টানতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার অভিযোগ কিউবার জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে।
ছবি : রয়টার্স

চলতি মাসের শুরুতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে কিউবায় প্রায় ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির সরকার। দেশটির এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর সমালোচনার মধ্যেই বিক্ষোভাকারীদের বিচারের আওতায় আনছে সমাজতান্ত্রিক দেশটি। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা জানায়, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুবই তুচ্ছ বিষয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক ব্যক্তির ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেছে তাদের স্বজনেরা।

শনিবার কিউবার সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট রুবেন রেমিঙ্গো ফেরো সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত দেশের মিউনিসিপ্যাল আদালতে ১৯টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, বিক্ষোভে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের কারণে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।’

হাজার হাজার বিক্ষোভাকারী কিউবার রাজধানী হাভানাসহ দেশটির বিভিন্ন সড়কে জড়ো হন। দেশজুড়ে চলমান অর্থনৈতিক সংকট করোনা মহামারির কারণে আরও বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবিতে ১১ ও ১২ জুলাই বিক্ষোভ করে তারা।


এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘স্বাধীনতা’, ‘স্বৈরাচারের পতন চাই’ ও ‘আমরা ক্ষুধার্ত’ এ রকম স্লোগান দেয়। কয়েক দশকের মধ্যে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এটা ছিল সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। হাভানার এক সাংবাদিক রেড লিন্ডসে ফেরোর সংবাদ সম্মেলনকে চলমান ঘটনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়ার ফল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, আটককৃত বিক্ষোভকারীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সমালোচনা হয়েছে।

লিন্ডসে আল-জাজিরাকে বলেন, আদালতে অনেকের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করতে না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। সরকার দ্রুত বিচার আইনে এই বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছে। তিনি আরও বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট বলেছেন তাঁরা দ্রুত বিচার আইনে মামলার বিচার করছেন না, মামলার কার্যক্রম নিজস্ব গতিতেই চলছে।’ তিনি বলেন প্রেসিডেন্ট ফেরো বলেছিলেন, ‘তাদের কিছু ভুল হতে পারে তবে বিচারপ্রক্রিয়ায় ভুল সংশোধন করা হবে।’

আইন অমান্য করা, বিশৃঙ্খলা, ভাঙচুর ও করোনা মহামারির মধ্যে মাস্ক না পরে বিক্ষোভ করার অভিযোগে শত শত মানুষকে আটক করেছে পুলিশ। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা আটক ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন, এখন পর্যন্ত সেখানে ৬০০ জনের নাম পাওয়া গেছে। ১৬ জুলাই জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা এক বিবৃতিতে আটক বিক্ষোভকারী ও সাংবাদিকদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়।