গরুর মলত্যাগের প্রশিক্ষণ

শৌচাগারে নেওয়া একটি গরু
ছবি: সংগৃহীত

শিশুদের মলত্যাগের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে গরুকে কেন নয়। এমন ধারণা থেকেই একদল বিজ্ঞানী গরুর মলত্যাগের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ কাজের উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশের সুরক্ষা। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, গরুর বর্জ্যে প্রচুর অ্যামোনিয়া থাকে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। তাই নির্দিষ্ট স্থানে গরুর মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলা গেলে সেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গরুর মলত্যাগের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর ফার্ম অ্যানিমেল বায়োলজি (এফবিএন) ও ফ্রেডরিখ লোফলার ইনস্টিটিউট (এফএলআই) এবং নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। এই প্রশিক্ষণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোলো ট্রেইনিং’।

এই বিষয়ে গত সোমবার একটি গবেষণা নিবন্ধও প্রকাশ করেছে জীববিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী কারেন্ট বায়োলজি। গবেষণার সহলেখক ও জার্মানির ইনস্টিটিউট ফর ফার্ম অ্যানিমেল বায়োলজির (এফবিএন) পশু মনোবিজ্ঞানী জ্যান লংবেইন বলেছেন, গবাদিপশু মল বা প্রস্রাব ত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলে মনে করা হয়। তাই প্রাণীটিকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেই কাজে অভ্যস্ত করতেই প্রশিক্ষণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রাণীরা বেশ চালাক। এদের শেখালে অনেক কিছুই শিখতে পারে।

প্রশিক্ষণের জন্য গরুকে একটি বদ্ধ শৌচাগারে রাখা হয়। যখন প্রাণীটি বর্জ্য ত্যাগ করে, তখন তাকে পুরস্কার হিসেবে দারুণ সব খাবার দেওয়া হয়। সেই খাবারের মধ্যে চিনিমিশ্রিত পানি অথবা ভাঙা বার্লি রয়েছে। গবেষণা নিবন্ধের প্রধান লেখক এবং এফবিএনের গবেষক নিল ডার্কসেন বলেছেন, বাইরে বের করার আগে গরুকে শৌচাগারে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে সেখানে বর্জ্য ত্যাগ করে।

একটি গবাদিপশু দিনে ৬৬ থেকে ৮৮ পাউন্ড মলত্যাগ এবং ৮ গ্যালন প্রস্রাব করে থাকে। এসব বর্জ্য ত্যাগের কোনো ঠিকঠিকানা থাকে না। ফলে সুবিধামতো যখনই সময় পায়, তখন যেখানে–সেখানে বর্জ্য ত্যাগ করে গবাদিপশু।

এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিশ্বে অ্যামোনিয়া গ্যাস নিঃসরণে সবচেয়ে দায়ী কৃষিকাজ। কৃষি থেকে নিঃসরিত অ্যামোনিয়ার অর্ধেকের বেশি আসে গবাদিপশু থেকে। গবাদিপশুর বর্জ্য যখন মাটিতে মেশে, তখন সেটি নাইট্রাস অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। এটি একটি গ্রিনহাউস গ্যাস। এ ছাড়া গোবর্জ্য মাটি ও পানি দূষিত করে।