গাদ্দাফির ছেলে সাইফ জীবিত

সাইফ আল-ইসলাম।
ফাইল ছবি: এএফপি

লিবিয়ার একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল বেশ কয়েক বছর ধরে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ২০১৪ সাল থেকে সাইফ আল-ইসলাম আল-গাদ্দাফির বেঁচে থাকার কোনো প্রমাণ নেই। লিবিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যেও সাইফের বেঁচে থাকা বা মৃত্যু নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য ছিল না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে সেই সাইফের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।    

প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক মাস আগে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির দক্ষিণ-পশ্চিমে নাফুশ পার্বত্যাঞ্চলের জিনতান মালভূমি এলাকায় নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক ও আলোকচিত্রীর সঙ্গে সাইফের দেখা হয়। তাঁদের সঙ্গে আলাপে সাইফ নিজের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দীর্ঘ সময় কথা বলেন।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ওই গ্রাম থেকে ২০ মিনিটের দূরত্বে একটি দোতলা বাড়িতে সাংবাদিকদের স্বাগত জানান সাইফ। তবে ওই বাড়িতেই তিনি থাকেন কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়নি। সাইফের চেহারায় সে সময় বয়সের ছাপ লক্ষ করা গেছে। তাঁর চুলও খানিকটা পেকে গেছে। সাইফের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনী বিচ্ছিন্ন ছিল।

সাইফ সাংবাদিকদের বলেন, ২০১১ সালে এক বিমান হামলায় তাঁর এই দুই আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়। সাইফ আরব শেখদের মতো পোশাক পরে ছিলেন। তাঁর মাথায় পাগড়ি ছিল। সাংবাদিকদের যে কক্ষে বসানো হয়, সেটি বেশ রাজকীয়ভাবে সাজানো ছিল। ওই সময় বাড়িতে অন্য কেউ ছিল না।

সাইফকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি বন্দী কি না। জবাবে সাইফ বলেন, তিনি এখন মুক্ত এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা ফিরে পেতে কাজ করছেন। এক দশক আগে যারা তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল, পরে তারা হতাশ হয়ে পড়ে। একসময় সেই বিপ্লবীরা উপলব্ধি করে, সাইফ তাদের শক্তিশালী মিত্র হতে পারে। সাইফ বলেন, ‘আপনি কল্পনা করতে পারেন? যারা আমাকে বন্দী হিসেবে পাহারা দিয়ে রাখার কথা ছিল, তাঁরা এখন আমার ভালো বন্ধু।’

২০১১ সালে দেশে দেশে আরব বসন্তের ঢেউয়ের সময় লিবিয়ার শাসক গাদ্দাফির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ শুরু হয়। লিবিয়ার নাগরিকদের ‘রক্ষা করার দায়িত্ববোধ’ থেকে নিরাপত্তা পরিষদ লিবিয়ায় সামরিক অভিযান অনুমোদন দেওয়ার পর মার্কিন সমর্থনপুষ্ট অ্যাংলো-ফ্রেঞ্চ সেনারা দেশটিতে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে গাদ্দাফির পতন ঘটে। দেশটির বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন গাদ্দাফি। সাইফ আল ইসলামকে আটক করে বিদ্রোহে অংশ নেওয়া একটি গোষ্ঠী।