জলবায়ু পরিবর্তনে বিলীন হয়েছে সিন্ধু সভ্যতা

সিন্ধু সভ্যতাছবি: সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে বরফ গলছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে। সামগ্রিকভাবে এ পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। কিন্তু এই পরিবর্তন যে শুধু বর্তমান সময়কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, এমনটা নয়। হাজার বছর আগের সভ্যতাও বিলীন হয়েছে এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে। এমনটাই জানান দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বদলে গিয়েছিল বর্ষা। এতে পতন হয় সিন্ধু সভ্যতার।

ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উত্তর ভারতের জলবায়ুর চরিত্র বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (আরআইটি) গবেষক ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিশান্ত মালিক জানিয়েছেন, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার উত্থান-পতনের জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বদলে যাওয়া বর্ষা।

এই নিয়ে কেওস নামে সাময়িকীতে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার গুহাগুলোতে জমে থাকা স্ট্যালাগমাইট খনিজের নির্দিষ্ট রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে গত ৫ হাজার ৭০০ বছরে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের গড় চরিত্র বুঝতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। নিশান্ত মালিক বলেন, গাণিতিক সূত্র ব্যবহার করে এভাবে বহু শতাব্দী পুরোনো জলবায়ু বুঝতে চাওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ।

এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার পতনের কারণ হিসেবে একদিকে যেমন যাযাবর ইন্দো-আর্যদের ক্রমাগত আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে। তেমনই গুরুত্ব পেয়েছে সেই সময় ঘটে যাওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভূমিকম্পের প্রসঙ্গও। এ ছাড়া সিন্ধু সভ্যতার শুরুর দিনগুলোতেই বর্ষার চরিত্রে একটা বড় রকমের পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। আবার এই সভ্যতা যতই বিলুপ্তির দিকে এগিয়েছে, ওই অঞ্চলের বর্ষার চরিত্রও ক্রমশ বদলে গেছে। রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকেরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনই যে সিন্ধু সভ্যতার পতনের মূল কারণ, এই ঘটনা তারই ইঙ্গিত বহন করে।