জাপানে শিনজো আবের উত্তরসূরি কে

ইয়োশিহিদ সুগা
ছবি: রয়টার্স

জাপানের ক্ষমতাসীন দল প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবের উত্তরাধিকারী নির্বাচনে ১৪ সেপ্টেম্বর ভোট দেবে। আজ বুধবার দলটির একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিহিদ সুগা প্রতিযোগিতায় নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। এএফপি বলছে, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ক্ষমতাসীন দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একটি বড় অংশের সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

নিজের বর্তমান মেয়াদপূর্তির এক বছর আগেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত শুক্রবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন শিনজো আবে। নির্বাচিত হলে আগামী সপ্তাহে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন ইয়োশিহিদ সুগা। তাঁকে দলে শিনজো আবের ডান হাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

দীর্ঘ সময় ধরে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন আবে। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে অবসর নিতে হচ্ছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কিছু বড় সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে বড় সমস্যা হচ্ছে করোনার কারণে বিপর্যস্ত জাপানের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বন্ধ হয়ে যাওয়া টোকিও অলিম্পিক ফের শুরু করা।

ইতিমধ্যে দলের বড় অংশের সমর্থন পাওয়া সুগা আজ বুধবার যেকোনো সময় প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন।

সুগা অবশ্য একেবারেই মাঠ ফাঁকা পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী পদে ইতিমধ্যে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। এলডিপিতে দারুণ জনপ্রিয় শিনজো আবের খুব কম সমালোচকদের অন্যতম সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। দলে বা দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের কাছে তাই ইশবা ততটা পছন্দের নেতা নন।

কিন্তু ‍অন্যান্য দলের পার্লামেন্ট সদস্যরা ইশিবাকে পছন্দ করায় সম্ভাব্য নতুন প্রধানমন্ত্রীর জরিপে তিনি সব সময়ই এগিয়ে থাকেন।

ইশিবা ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন ফুমিও কিশিদা। ৬৩ বছরে কিশিদা ২০১২-১৭ মেয়াদে আবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। যদিও কূটনৈতিক নানা বিষয়ের নিয়ন্ত্রণ আবে নিজের হাতেই রাখতেন। হিরোশিমা থেকে আসা কিশিদাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে পছন্দ করেন আবে। কিন্তু ভোটের জরিপে কিশিদার অবস্থান বেশ পেছনে।

জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে এলডিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই দলীয় সভাপতিই পার্লামেন্টের ভোটে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। জনমত জরিপের সঙ্গে ক্ষমতাসীন এলডিপির অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য দলীয় সমর্থন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এলডিপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ছোট আকারের ভোটের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে র‌্যাঙ্ক এবং ফাইল সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। এর বদলে শুধু এমপি পদে থাকা সদস্যরা এবং দেশের ৪৭টি প্রদেশের তিনজন করে প্রতিনিধি ভোট দেবেন।

এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অবশ্য বেশ কিছু সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে দলের কর্মকর্তারা বলছেন, বড় আকারের ভোট গ্রহণে সময় বেশি লাগবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট আকারের ভোটের এ ফরম্যাটে বিশেষ সুবিধা পাবেন সুগা। তিনি ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতায় কার্যকরভাবে নিজের অবস্থান শক্ত করেছেন।